নয়াদিল্লি: শিক্ষা এবং কর্মক্ষেত্রে রূপান্তরকামীদের  জন্যও সংরক্ষণের দাবি। সেই দাবিতে আবেদন জমা পড়েছে সুপ্রিম কোর্টে। সেই নিয়ে এবার কেন্দ্রীয় সরকার, বিভিন্ন রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের সরকারকে নোটিস ধরাল দেশের শীর্ষ আদালত (Supreme Court)। রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারের শিক্ষাকেন্দ্র এবং চাকরিতে রূপান্তরকামীদের সংরক্ষণ দেওয়া নিয়ে কী মত, জানতে চাওয়া হল তাতে। (Transgender Reservations)


কেরলের বাসিন্দা সুবি কেসি আদালতে সংরক্ষণ চেয়ে আবেদন জানান। তিনি নিজেও রূপান্তরকামী। শুক্রবার তাঁর ওই আবেদনের শুনানি চলছিল। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারতি জেবি পর্দিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রর ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি চলছিল।  সেখানে সংবিধানের অনুচ্ছে নং ১৪, ১৯, ২১-এ উল্লেখিত নাগরিকদের সরকারি চাকরির মৌলিক অধিকারের বিষয়টি তুলে ধরে কেন্দ্র, রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুিলির সরকারকে নোটিস পাঠান প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়।


আদালতে সুবি জানান, একাধিক সমীক্ষায় রূপান্তরকামীদের সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং শিক্ষাগত যোগ্যতার নিরিখে অনগ্রসর বলে উল্লসেখ করা হয়েছে। তুলে ধরা হয়েছে তাদের শোচনীয় অবস্থার কথা। শুধুমাত্র কলমের কালি খরচ করে হাত গুটিয়ে না থেকে, রূপান্তরকামীদের প্রাপ্য অধিকার বুঝিয়ে দেওয়ার সময় এসেছে। এ প্রসঙ্গে ২০১৪ সালের একটি মামলার প্রসঙ্গও আদালতে তোলেন সুবি, যেখানে রূাপন্তরকামীদের অনগ্রসর শ্রেণির নাগরিক হিসেবে দেখার কথা বলা হয়। 


আরও পড়ুন: ISRO Salary: ১৭ মাস বেতন নেই ইঞ্জিনিয়ারদের, অভিযোগে তপ্ত রাজনীতি, নামমাত্র টাকা, ISRO-র বরাদ্দেও কাটছাঁট!


আবেদনকারীর আইনজীবী আদালতে সওয়াল জবাব করার সময়, তিনি হাইকোর্টে গেলেন না কেন, প্রশ্ন করা হয় তাঁকে। প্রশ্ন করা হয়, অনুচ্ছেদ ৩২-এর আশ্রয় নিচ্ছেন কেন তিরি? তার উত্তরে আবেদনকারীর আইনজীবী জানান, মামলায় সব রাজ্যকে পক্ষ করেছেন তাঁরা। এর পরই শুনানি শুরু হয়। অনুচ্ছেদ ৩২ ভারতীয় সংবিধানের এমন একটি অংশ, যা মৌলিক অধিকারের দাবি নিয়ে সরাসরি সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার অধিকার প্রদান করে ভারতীয় নাগরিকদের।


আবেদনকারীর আইনজীবী আদালতে ন্যাশনাল এইডস কন্ট্রোল অর্গানাইজেশনের একটি রিপোর্টও জমা দেন। ন্যাশনাল এইডস কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন রাষ্ট্রপুঞ্জের সঙ্গে উন্নয়নমূলক কাজে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে। তাদের একটি রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, ভারতে রূপান্তরকামীদের জন্য কাজের সুযোগ যেমন কম, তেমনই তাঁদের শিক্ষিত করে তোলা, প্রশিক্ষণ দিয়ে যোগ্য এবং দক্ষ করে তোলার ব্যবস্থা যথেষ্ট নয়। 





আদালতে আবেদনকারী জানান, ২০১৯ সালের ট্রান্সজেন্ডার পার্সন্স (প্রোটেকশন অফ রাইটস) আইন রূপান্তরকামীদের নিজেদের অধিকার বুঝতে শিখিয়েছে। কিন্তু শিক্ষা এবং কর্মক্ষেত্রে সংরক্ষণ দিতে পারেনি। সেই নিয়ে একাধিক আবেদন জমা পড়লেও, আজ পর্যন্ত সুরাহা হয়নি।