নয়াদিল্লি: জাতীয় অরণ্যে নির্বিচারে বৃক্ষনিধন এবং বেআইনি নির্মাণ নিয়ে ক্ষুব্ধ সুপ্রিম কোর্ট। ‘মহাভারত’কে উদ্ধৃত করে বন্যপ্রাণ এবং অরণ্যকে রক্ষা করার নিদান শীর্ষ আদালতের। অবিলম্বে পদক্ষেপ করার পাশাপাশি, যে বা যাঁরা সর্বনাশের জন্য দায়ী, তাঁদের থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করার নির্দেশ দেওয়া হল। পাশাপাশি কেন্দ্রকে বিশেষ কমিটি গঠনেরও নির্দেশ দিল শীর্ষ আদালত। (Jim Corbett National Park)


জিম করবেট জাতীয় অরণ্যে নির্বিচারে বৃক্ষনিধন এবং বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ। সেই নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন পরিবেশকর্মী তথা আইনজীবী গৌরব বনশল। জিম করবেট জাতীয় অরণ্যের ভিতরে উত্তরাখণ্ড সরকার যে টাইগার সাফারি এবং চিড়িয়াখানা গড়ে তার ভিতর পশুদের খাঁচাবন্দি করার প্রস্তাব এনেছে, তার বিরোধিতা করে আদালতে যান বনশল।(Supreme Court)


বুধবার বিচারপতি বিআর গাভাই, বিচারপতি পিকে মিশ্র এবং বিচারপতি সন্দীপ মেহতার বেঞ্চে মামলার শুনানি চলছিল। সেখানে উত্তরাখণ্ডের প্রাক্তন বনমন্ত্রী হরক সিংহ রওয়ত এবং তদানীন্তন ডিভিশনার ফরেস্ট অফিসার কিসান চাঁদকে তীব্র ভর্ৎসনা করে আদালত। আদালত জানায়, এঁরা নিজেদেরই আইনের ঊর্ধ্বে ভেবে বসেছিলেন। তাই নিয়ম-কানুনের তোয়াক্কা না করে জিম করবেট জাতীয় অরণ্যে নির্বিচারে বৃক্ষনিধন করেছেন।


আরও পড়ুন: Chandrayaan-4 Mission: একযাত্রায় দু’দফায় উৎক্ষেপণ, ঠিক যে কারণে চন্দ্রযান-৪ অভিযান জটিল


আগে থেকেই এই মামলার তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (CBI). আদালত এদিন জানায়, আরও অনেকে নিঃসন্দেহে এর সঙ্গে জড়িত। CBI যেহেতু তদন্ত করছে, তাই এ নিয়ে আর কিছু বলবে না আদালত। তবে কেন্দ্রীয় সরকারকে পদক্ষেপ করতে হবে। জিম করবেট জাতীয় অরণ্য আদৌ টাইগার সাফারির উপযুক্ত কি না, তা খতিয়ে দেখতে হবে তাদের। আদালত জানিয়েছে, শুধুমাত্র নির্দিষ্ট কিছু এলাকাতেই নয়, বন্যপ্রাণ সংরক্ষণে সর্বত্র নজর দেওয়া প্রয়োজন। এ প্রসঙ্গেই ‘মহাভারতে’র প্রসঙ্গ টেনে আনে আদালত। ‘মহাভারত’কে উদ্ধৃত করে আদালত বলে, “বন ছাড়া বাঘ বিনষ্ট হয় এবং বাঘ ছাড়া বিনষ্ট হয় বনও।” আপাতত সাফারিতে আপত্তি না জানালেও, আদালতের নির্দেশ মেনেই সব কিছু হতে হবে বলে জানানো হয়েছে। এযাবৎ যা ক্ষতি হয়েছে, যাঁদের জন্য হয়েছে, তাঁদের থেকে উশুল করতে হবে বলেও জানিয়েছে আদালত।


এখনও পর্যন্ত যে পরিসংখ্যান সামনে এসেছে, সেই অনুযায়ী, জিম করবেট জাতীয় অরণ্যে ৬০০০-এর বেশি বৃক্ষনিধন হয়েছে। বাঘের শিকার তেমন বৃদ্ধি না পেলেও, নির্বিচারে বৃক্ষনিধনের বিষয়টি উপেক্ষা করা যায় না বলে জানিয়েছে আদালত। বাঘ সংরক্ষণে তিন সদস্যের কমিটির পরামর্শ অনুযায়ীই চলতে হবে বলে জানানো হয়েছে। আগামী তিন মাসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে হবে ওই কমিটিকে।