নয়াদিল্ল: সুপ্রিম কোর্টে এবার প্রশ্নের মুখে পড়ল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। চার্জশিটের উপর অতিরিক্ত চার্জশিট দায়ের করে, অনির্দিষ্ট কালের জন্য অভিযুক্তদের বন্দি করে রাখা নিয়ে শীর্ষ আদালতে প্রশ্নের মুখে পড়ল ED. যেভাবে বিনা বিচারে দিনের পর দিন অভিযুক্তদের জেলে বন্দি করে রাখা হচ্ছে, ED-র এই নীতিতে তাদের একেবারেই সায় নেই বলে জানাল আদালত। (Supreme Court)
ঝাড়খণ্ডের বেআইনি খনি মামলায় এক অভিযুক্তের জামিনের মামলার শুনানিতে এই মন্তব্য করল আদালত। ঝাড়খণ্ডের ওই মামলায় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের সহয়োগী প্রেম প্রকাশ জামিনের আর্জি জানিয়ে আবেদন জানিয়েছিলেন। গত জানুয়ারি মাসে ঝাড়খণ্ড হাইকোর্ট সেই আবেদন খারিজ করলে, অভিযুক্ত সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। জানান, দীর্ঘ ১৮ মাস ধরে জেলবন্দি করে রাখা হয়েছে তাঁকে। (Supreme Court Rebukes ED)
প্রকাশকে জামিন দেওয়ার বিরোধিতা করে ED. তাদের হয়ে আদালতে সওয়াল করেন অতিরির্ত সলিসিটর জেনারেল এসভি রাজু। প্রকাশের জামিনের বিরোধিতা করে তিনি জানান, অভিযুক্তকে জামিন দিলে, জেল থেকে বেরিয়ে তিনি প্রমাণ নষ্ট করতে পারেন। কিন্তু তাঁর যুক্তিতে আমল দেয়নি আদালত। বিচারপতি সঞ্জীব খন্না, এবং দীপঙ্কর দত্তের বেঞ্চ বলে, "তেমন কিছু ঘটলে আমাদের জানাবেন। তাই বলে ১৮ মাস জেলে বন্দি করে রাখবেন!"
বিনা বিচারে অভিযুক্তকে বন্দি করে রাখা নিয়েও কড়া মন্তব্য করে আদালত। বলা হয়, "জামিনের মূল উদ্দেশ্যই হল তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত অভিযুক্তকে গ্রেফতারি থেকে রক্ষা করা। কাউকে গ্রেফতার করে আপনি বলতে পারেন না যে, তদন্ত শেষ হয়নি এখনও। এখনই বিচার শুরু করা যাবে না। একটার পর একটা চার্জশিট দায়ের করা যায় না এভাবে, বিনা বিচারে কাউকে জেলে বন্দি রাখা যায় না। এই মামলায় ১৮ মাস ধরে জেলে বন্দি রয়েছেন অভিযুক্ত। আমাদের বিষয়টি ভাবাচ্ছে। আপানাদের তা পরিষ্কার করে জানিয়ে দিচ্ছি। কাউকে গ্রেফতার করলে বিচারও শুরু করতে হবে।" প্রকাশকে জামিন না দেওয়ার কোনও কারণ নেই বলে জানায় আদালত।
এই মুহূর্তে যে আইন রয়েছে দেশে, সেই অনুযায়ী, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তদন্ত শেষ না করে পারলে, চূড়ান্ত চার্জশিট দায়ের করতে না পারলে, অভিযুক্ত ব্যক্তি জামিন পাওয়ার যোগ্য। এ নিয়ে ভারতীয় অপরাধ আইনে ৬০ এবং ৯০ দিনের সময়সীমার কথা উল্লেখ রয়েছে। তবে মামলার নিরিখে এই সময়সীমা এগনো, পিছনো যায়। এর আগে, গত বছর এপ্রিল মাসেও বিচারপতি কৃষ্ণ মুরারি এবং সিটি রবিকুমার বিনা বিচারে অভিযুক্তকে দীর্ঘদিন বন্দি করে রাখার সমালোচনা করেন। বার বার চার্জশিট দায়ের করে অভিযুক্তের জামিনের অধিকার ঠেকিয়ে রাখা হচ্ছে বলে মন্তব্য করে আদালত।