নয়াদিল্লি: উদয়াস্ত পরিশ্রম করে যান। সংসারের খুঁটিনাটি সব থাকে নখদর্পণে। অন্যের যত্ন নিতে গিয়ে, নিজের কথা মাথায় থাকে না। এহেন গৃহিণী এবং তাঁর গৃহকর্মের মূল্য কোনও ভাবেই নির্ধারণ করা সম্ভব নয় বলে জানাল সুপ্রিম কোর্ট। দেশের সর্বোচ্চ আদালতের মতে, সংসার সামলান যে গৃহিণী, তাঁর স্থান অনেক উঁচুকে। সংসারে তাঁর অবদানকে টাকার অঙ্ক দিয়ে বিচার করা কঠিন। (Supreme Court)


শুক্রবার একটি দুর্ঘটনার মামলার শুনানি চলছিল, যার সঙ্গে ৬ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের প্রশ্নও জড়িয়েছিল। সেই মামলার শুনানিতেই এমন মন্তব্য করে বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং কেভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ। বলা হয়, "পরিবারের রোজগেরে সদস্য যাঁর নির্দিষ্ট আয় রয়েছে, তাঁর মতোই সমান গুরুত্ব গৃহিণীর। দিন ভর যে কাজ করেন গৃহিণী, একটি একটি করে যদি ধরা হয়, তা সবদিক থেকেই অনেক বেশি এবং অমূল্য। এ ব্যাপারে কোনও সন্দেহ নেই। গৃহিণীর পরিশ্রমকে টাকার অঙ্কে বাঁধা অসম্ভব।" (Homemakers Are Equal)


যে মামলার শুনানিতে এই মন্তব্য করে, তা বেশ পুরনো। ২০০৬ সালে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে মারা যান এক মহিলা। ক্ষতিপূরণবাবদ তাঁর পরিবারকে বেশি টাকা দিতে হবে বলে জানায় আদালত। আদালত জানায়, যে গাড়িতে চেপে যাচ্ছিলেন ওই মহিলা, সেটির বিমা করা ছিল না। ফলে মহিলার পরিবারকে মোটা টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দায় বর্তায় গাড়ির মালিকের উপরই।


আরও পড়ুন: Most Popular CMs: BJP থেকেই চার জন, সঙ্গে নবীন পট্টনায়েক, জনপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রীদের তালিকা সামনে এল


এর আগে, ওই মামলায় ট্রাইব্যুনাল ওই মহিলার স্বামী এবূং সন্তানকে ২.৫ লক্ষ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। ট্রাইব্যুনালের সেই রায়ের বিরুদ্ধে উত্তরাখণ্ড হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় মৃতার পরিবার। ২০১৭ সালে সেই আবেদন খারিজ হয়ে যায় উত্তরাখণ্ড হাইকোর্টে। সেই সময় রাজ্য়ের আদালত জানায়, মৃতা একজন গৃহিণী ছিলেন। তাঁর আয়ু এবং আয়ের যদি একটি ধারণা তৈরি করা যায়, সেই নিরিখেই ক্ষতিপূরণ প্রাপ্য পরিবারের। 


সেই মামলাই সুপ্রিম কোর্টে এসে পৌঁছয়। শুক্রবার তার শুনানিতে হাইকোর্টের যুক্তি খারিজ হয়ে যায়। আদালত বলে, "দিনমজুরের থেকেও গৃহিণীর আয় কম ধরা হল কোন যুক্তিতে? এই ধরনের চিন্তাভাবনা মানা যায় না। কোনও গৃহিণীকে এত গুরুত্বহীন ভাবা যায় না।" এর পরই মহিলার পরিবারকে ৬ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়। আগামী ছয় সপ্তাহের মধ্যে ওই ক্ষতিপূরণের অঙ্ক পরিবারের হাতে তুলে দিতে হবে গাড়ির মালিককে।