নয়াদিল্লি: পুরনো মামলা নতুন করে খোলানো, আগের রায় বদলে দেওয়ার ‘প্রবণতা’, তা নিয়ে এবার মুখ খুলল সুপ্রিম কোর্ট। দেশের সর্বোচ্চ আদালত জানিয়েছে, মামলাকারীদের মধ্যে কোনও মামলার পূর্ববর্তী রায় বাতিল করা এবং তার জন্য পরবর্তী বেঞ্চের কাছে সেই মর্মে আবেদন জানানোর প্রবণতা যেভাবে বাড়ছে, তা নিন্দনীয়। এভাবে চলতে দিলে সংবিধানের ১৪১ নম্বর অনুচ্ছেদে রায় অক্ষুণ্ণ রাখার যে ‘গ্যারান্টি’ রয়েছে, তা ক্ষুণ্ণ হবে। (Supreme Court)

Continues below advertisement

বুধবার বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত এবং অগাস্টিন জর্জ মাসিহ্-র বেঞ্চ এই মন্তব্য করে। বিচারপতিরা জানান, নতুন কোনও বিষয় সংযুক্ত হলেও, ইতিমধ্যেই যে মামলায় সিদ্ধান্তগ্রহণ হয়ে গিয়েছে, তা নতুন করে খোলানো হলে আইনি ব্যাখ্য়ায় অসঙ্গতির ঝুঁকি থাকে, সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তগ্রহণের যে বিশেষ ক্ষমতা রয়েছে, তা দুর্বল হয়ে যায়। (Overturning Past Verdicts)

বিচারপতিদের বলতে শোনা যায়, “আজকাল বেশ যন্ত্রণার সঙ্গেই একটি প্রবণতা লক্ষ্য করছি যে, এই আদালতে (আমরাও যার অপরিহার্য অংশ) বিচারপতিদের, তাঁরা এখন পদে থাকুন বা না থাকুন, সময়ের ব্যবধান নির্বিশেষে, তাঁদের আগের রায় অন্য বেঞ্চকে দিয়ে বদলে দেওয়া হচ্ছে। পূর্ববর্তী রায়ে ক্ষুব্ধ কোনও পক্ষ পরবর্তী বেঞ্চ বা বিশেষ ভাবে গঠিত বেঞ্চগুলিকে দিয়ে আগের রায় বাতিল করাচ্ছে।”

Continues below advertisement

এর সপক্ষে একাধিক উদাহরণও তুলে ধরেন বিচারপতিরা, যেমন, বনশক্তি, দিল্লিতে বাজি নিষিদ্ধ করা, তামিলনাড়ুর রাজ্যপালের বিল আটকে রাখার মামলা, ভূষণ স্টিল ইনসলভেন্সি মামলা।  একটি খুনের মামলায় জামিনের শর্তাবলী পুনর্বিবেচনার আবেদন নিয়ে শুনানিতেই ওই সব মামলার উদাহরণ টানে আদালত। বিচারপতি অভয় এস ওকা অভিযুক্তকে কলকাতা ছেড়ে না বেরনোর নির্দেশ দেন। আগেও সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানান অভিযুক্ত। সেই আবেদন খারিজ হলে, বিচারপতি ওকা অবসরগ্রহণের পর বিচারপতি দত্তর বেঞ্চে জামিনের শর্তাবলী শিথিলের আবেদন জমা পড়ে। বিচারব্যবস্থাকে এভাবে নিজের স্বার্থে ব্যবহার করার নিন্দা করেছেন দুই বিচারপতিই।

ওই আবেদন খারিজ করে দিয়ে বিচারপতি দত্ত বলেন, “পূর্ববর্তী রায় বাতিল হওয়া মানেই তুলনামূলক ভাল বিচার নয়।” খুনের মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তির আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয়। আদালত বলে, “শর্তাবলীতে কোনও পরিবর্তন ঘটানো বা তা শিথিল করলে তাতে শুধুমাত্র আদালতের জামিন মঞ্জুরের নির্দেশ লঙ্ঘিত হবে না, আদালতের বৈচারিক সিদ্ধান্তের সম্পূর্ণতার নীতির প্রতি আদালত উদাসীন বলে ভুল বার্তা যাবে। জামিন মঞ্জুরের সময় আগের বেঞ্চ যে কঠোর শর্ত আরোপ করে, তা নির্দিষ্ট তথ্য ও পরিস্থিতির নিরিখে যুক্তিযুক্ত ছিল, যাতে হস্তক্ষেপের কোনও কারণ দেখছি না।”