নয়া দিল্লি: ২০০৬ সালের ৭/১১ মুম্বাই ট্রেন বিস্ফোরণ মামলায় ১২ জন অভিযুক্তকে খালাস দেওয়ার বম্বে হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে মহারাষ্ট্র রাজ্যের দায়ের করা ফৌজদারি আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে আজ (২৪ জুলাই) সুপ্রিম কোর্ট নোটিশ জারি করেছে। ২০০৬ সালের মুম্বই লোকাল ট্রেন বিস্ফোরণ মামলায় বম্বে হাইকোর্ট সম্প্রতি যে ১২ জন অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস দিয়েছিল, সেই রায়ের উপর বৃহস্পতিবার স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। তবে শীর্ষ আদালত স্পষ্ট করে জানিয়েছে, এই খালাসপ্রাপ্তদের পুনরায় গ্রেপ্তার করা যাবে না। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, "সকল অভিযুক্তকে ইতিমধ্যেই মুক্তি দেওয়া হয়েছে, ফলে তাঁদের আবার জেলে ফেরানোর কোনও প্রশ্নই ওঠে না।

গত মঙ্গলবারই মুম্বই ট্রেন বিস্ফোরণ মামলায় বম্বে হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল মহারাষ্ট্রের সন্ত্রাস দমন শাখা। প্রধান বিচারপতি বিআর গাভাইয়ের ডিভিশন বেঞ্চে জরুরি ভিত্তিতে মামলার শুনানির আর্জি জানান মহারাষ্ট্র এটিএসের আইনজীবী। বিষয়টিকে 'গুরুতর' বলে দাবি করেন তিনি। ওই আর্জিতে সাড়া দিয়েছিলেন প্রধান বিচারপতি।গত সোমবার (২১ জুলাই) বম্বে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ ২০০৬ সালের ট্রেন বিস্ফোরণ মামলায় সাজা পাওয়া ১২ জনকে বেকসুর খালাস বলে ঘোষণা করে। খালাস পাওয়াদের মধ্যে পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড ও সাতজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দিয়েছিল নিম্ন আদালত। যদিও মামলা চলাকালীন এক আসামির মৃত্যু হয়েছিল।

২০০৬ সালের ১১ জুলাই দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী হিসাবে পরিচিত মুম্বইয়ের লোকাল ট্রেনে ধারাবাহিক বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছিল। ১১ মিনিটের মধ্যে সাতটি ট্রেনে প্রেসার কুকারের মাধ্যমে রাখা বোমা বিস্ফোরণে প্রাণ হারান ১৮৯ জন। আহত হন ৮০০-র বেশি যাত্রী। তদন্তে নেমে পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই ও জঙ্গি সংগঠন ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের যোগসূত্র খুঁজে পান গোয়েন্দারা। বিস্ফোরণের ঘটনায় জড়িত থাকার অপরাধে ২০১৫ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর বিশেষ মহারাষ্ট্র সংগঠিত অপরাধ নিয়ন্ত্রণ আইন (MCOCA) আদালত ১২ জনকে সাজা শোনায়। 

গত সোমবার (২২ জুলাই), বম্বে হাইকোর্টের বিচারপতি অনিল কিলোর ও শ্যাম চাঁদকের বেঞ্চ ওই বিশেষ আদালতের রায় বাতিল করে সমস্ত অভিযুক্তকে খালাস দেন। আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল, "প্রসিকিউশন তাদের দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণে তারা যুক্তিসঙ্গত সন্দেহের ঊর্ধ্বে প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি।"