তিরুঅনন্তপুরম: কেরলে বিজেপি-র সাংসদ বলতে তিনি একাই। সেই সুরেশ গোপী কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করতে ইচ্ছুক। বিজেপি-র সাংসদ হওয়ার পাশাপাশি, পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রক এবং পর্যটন মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী সুরেশ। অতি সম্প্রতি রাজ্যসভার সাংসদ হওয়া সি সদানন্দন মাস্টারের হাতে মন্ত্রিত্ব তুলে দিয়ে সরে আসতে চান তিনি। কেন এমন ইচ্ছা, তাও খোলাখুলি জানিয়েছেন সুরেশ, যা নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। (BJP News)
২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে কেরলের ত্রিশূর থেকে জয়ী হন সুরেশ। এর পর দু'-দু'টি মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী হন। কিন্তু রবিবার দলের নেতা, কর্মী, সমর্থকদের সামনেই পদত্য়াগের ইচ্ছা প্রকাশ করেন তিনি। সেই সভায় উপস্থিত ছিলেন খোদ সদানন্দন, যাঁকে নিজের জায়গায় বসাতে চান সুরেশ। সদানন্দন রাজ্যসভায় সাংসদ হওয়ায়, কান্নুরের রাজনীতিতে বিরাট পট পরিবর্তন ঘটেছে বলেও জানান। (Suresh Gopi)
কিন্তু হঠাৎ মন্ত্রিত্ব ছাড়তে চান কেন সুরেশ? নিজেই সেই কারণ ব্যাখ্য়া করেছেন। তাঁর কথায়, "সত্যি বলছি, আমি শুধু অভিনয়টাই চালিয়ে যেতে চাই। আমাকে আরও রোজগার করতে হবে। আমার রোজকার একেবারে বন্ধ হয়ে গিয়েছে।" মন্ত্রী হওয়ার কোনও ইচ্ছাই তাঁর ছিল না বলে জানিয়েছেন সুরেশ। তাঁর বক্তব্য, "নির্বাচনের একদিন আগেই সাংবাদিকদের বলেছিলাম যে, আমি মন্ত্রী হতে চাই না। সিনেমার কেরিয়ারই এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। অভিনয় ছেড়ে কখনও মন্ত্রী হতে চাইনি আমি।"
মলয়ারি ছবির জনপ্রিয় অভিনেতা সুরেশ। ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে তিনি বিজেপি-তে যোগ দেন। তাঁর দাবি, মন্ত্রী হওয়ার বাসনা কোনও কালেই ছিল না তাঁর। ভোটে জেতার দরুণ দলই তাঁকে মন্ত্রী করার সিদ্ধান্ত নেন। নিজের জায়গায় সদানন্দনকে বসানোর সুপারিশ করতে গিয়ে বলেন, "দায়িত্বের সঙ্গেই বলছি, আমাকে সরিয়ে সদানন্দন মাস্টারকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করা উচিত। এতে কেরলের রাজনীতিতে নতুন ইতিহাসের সূচনা হবে বলে বিশ্বাস করি।"
সম্প্রতি সুরেশকে ঘিরে বিতর্ক মাথাচাড়া দেয়। নিজের কেন্দ্রের মানুষকে 'প্রজা' বলে উল্লেখ করেছিলেন। সেই নিয়ে বিতর্ক মাথাচাড়া দেয়। বিরোধীরা তীব্র আক্রমণ করেন তাঁকে। যদিও সুরেশের দাবি, তাঁর মন্তব্য বিকৃত করা হয়েছে। সুরেশকে বলতে শোনা যায়, "প্রজা শব্দ ব্যবহারে অন্য়ায় কোথায়? সাফাইকর্মীদের আগে অন্য কিছু বলা হতো। একই ভাবে প্রজা এবং প্রজাতন্ত্র অপমানজনক শব্দ হতে পারে না।"
কলেজে পড়ার সময় থেকেই রাজনীতিতে সক্রিয় সুরেশ। গোড়ার দিকে SFI-এর সক্রিয় কর্মী ছিলেন। পরবর্তীতে ইন্দিরা গাঁধীর ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন। ২০০৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে LDF এবং UDF-এর হয়ে প্রচার করেন। ২০১৬ সালে হঠাৎই বিজেপি-তে যোগ দেন এবং রাজ্যসভার মনোনীত সাংসদ হন। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপ প্রার্থী করলেও পরাজিত হন সুরেশ। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনেও পরাজিত হন। শেষ পর্যন্ত ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হন।
অন্য দিকে, বিজেপি-র বর্ষীয়ান নেতা সদানন্দন। রাজনৈতিক হিংসারও শিকার হতে হয় তাঁকে। ১৯৯৪ সালে দুই পা হারাতে হয় তাঁকে। CPI-এর হামলায় পা বাদ যায় বলে অভিযোগ করেন তিনি।