কলকাতা: লালগ্রহে প্রাণ ও জলের হদিশ পাওয়ার পথে আরও এক ধাপ এগোল নাসা। গভীর রাতে মঙ্গলে অবতরণ করল মার্কিন মহাকাশ গবেষণাকেন্দ্রের রোভার ‘পারসিভের্যান্স’। শেষ সাত মিনিটের আতঙ্ক কাটিয়ে সফল অবতরণ। আর এই অভিযানের অবদান রয়েছে ভারতীয় বংশোদ্ভূত এক নারীর। রোভার ল্যান্ডিং এর যাবতীয় খুঁটিনাটি বিষয় ছিল তাঁর হাতেই।
তিনি ড. স্বাতী মোহন। যিনি জন্মসূত্রে ভারতীয়। এরপর লেখাপড়া থেকে কর্মক্ষেত্র সবটাই মার্কিন মুলুকে। আমেরিকায় যখন তিনি যান, তখন বয়স মাত্র ১। বর্তমানে উত্তর ভার্জিনিয়া-ওয়াশিংটন ডিসি মেট্রো এলাকার বাসিন্দা তিনি। নাসার বিজ্ঞানী জানান, ৯ বছর থেকে মহাকাশের প্রতি আকর্ষণ তৈরি হয়। এই সংক্রান্ত বিভিন্ন বই পড়তেন। ১৬ বছর বয়সে ঠিক করেন তিনি হবেন মহাকাশ বিজ্ঞানী। মেকানিক্যাল এয়রোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং পড়েন কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ে। স্নাতক হন তিনি। অ্যাস্ট্রোনটিক্সে এমএস থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।
কীভাবে অবতরণ হবে ‘পারসিভের্যান্স’-এর? সেই দিকেই তাকিয়ে ছিল গোটা বিশ্ব। ঠিক সেই সময় নিজের দায়িত্ব পালন করছিলেন স্বাতী। রোভারের গাইডেন্স, নেভিগেশন ও কন্ট্রোলস অপারেশনসের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। জিএনঅ্যান্ডসি-এর দায়িত্ব সফল পাবে পালন করলেন স্বাতী মোহন এবং তাঁর টিম। লালগ্রহের রুক্ষ মাটিতে নামার উচ্ছ্বসিত স্বাতী। তিনি বলেন, পারসিভের্যান্সের মঙ্গলের মাটিতে সফল অবতরণ। প্রাণের সন্ধান করতে পারবে। আর স্বাতীর কারণে নাসার সাফল্যের সঙ্গে জড়িয়ে গেল ভারতের নাম।
নাসা সূত্রে খবর, লাল গ্রহে প্রাণের সন্ধান করবে ‘পারসিভের্যান্স’। সেইসঙ্গে খোঁড়াখুঁড়ি করে মাটি ও পাথর সংগ্রহ করবে। ৪৩টি টেস্ট টিউবে তা সংগ্রহ করা হবে। ২০২৬ সালে নাসার পরবর্তী অভিযানে সেই টেস্ট টিউবগুলি পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা রয়েছে। এর আগে ২০১২ সালে মঙ্গলের লাল মাটিতে সফলভাবে অবতরণ করে ‘কিউরিওসিটি রোভার’। ২০১৮ সালে মঙ্গলের বুকে নামে নাসার মহাকাশযান ‘ইনসাইট’। ২০২০ সালের ৩০ জুলাই আমেরিকার ফ্লোরিডার Cape Canaveral Air Force Station থেকে অ্যাটলাস ফাইভ লঞ্চ ভেহিকেলে মঙ্গলে পাড়ি দেয় নাসার রোভার ‘পারসিভের্যান্স’। ৬ মাস ১৮ দিন পর সেই ‘পারসিভের্যান্স’ নামল মঙ্গলের মাটিতে।