তাইপেই: গভীর রাতে পর পর দু'বার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল তাইওয়ান। স্থানীয় সময় অনুযায়ী, রাত ২টো বেজে ২১ মিনিটে প্রথম বার তীব্র ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে পূর্ব উপকূলের হুয়ালিন কাউন্টি। রিখটার স্কেলে কম্পনের তীব্রতা ছিল ৬.১। তার কিছু ক্ষণ পর, আবারও কম্পন অনুভূত হয়, রিখটার স্কেলে যার তীব্রতা ছিল ৫.৮। এখনও পর্যন্ত হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির খবর মেলেনি। (Taiwan Earthquake)
তাইওয়ানের সেন্ট্রাল ওয়েদার অ্যাডমিনিস্টেরেশন (CWA) জানিয়েছে, ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল হুয়ালিন কাউন্টি হল থেকে ২৩ কিলোমিটার উত্তর এবং উত্তর-পশ্চিমে, ফিলিপিন্স সাগরের ২৪.৯ কিলোমিটার গভীরে। দ্বিতীয় কম্পনটিও হুয়ালিন উপকূল সাগরের ১৮.৯ কিলোমিটার গভীর থেকে ছড়িয়ে পড়ে। সবচেয়ে বেশি কম্পন অনুভূত হয় হুয়ালিন, ইলান, নানতুও, হশিনচু, তাইচুং, তাওউয়ান এবং নিউ তাইপেইয়ে। (Earthquakes in Taiwan)
তাইওয়ানে ভূমিকম্পের তীব্রতার সাতটি ধাপ রয়েছে, এদিন তা চতুর্থ ধাপে ছিল। এর পাশাপাশি, মিয়াওলি, তাইতুং, ইয়ুনলিন এবং চিয়ায়িতেও কম্পন অনুভূত হয়। সেখানে তীব্রতা তৃতীয় ধাপেই ছিল বলে জানা গিয়েছে। তাইওয়ানের প্রায় সর্বত্রই কম্পন অনুভূত হয়েছে। মাত্র আধ ঘণ্টার ব্যবধানে পর পর দু’বার ভূমিকম্প হয় বলে জানা গিয়েছে। পর পর এই দুই ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি কত হয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
গভীর রাতে যখন ভূমিকম্প হয়, সেই সময় সকলেই ঘুমাচ্ছিলেন। কম্পন অনুভূত হওয়ার পর তাই শোরগোল পড়ে যায়। বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসেন মানুষ জন। তবে এ মাসের শুরু থেকে এই নিয়ে পর পর বেশ কয়েক বার ভূমিকম্প হল তাইওয়ানে। গত ৩ এপ্রিল ভূমিকম্প হয় সেখানে। রিখটার স্কেলে সেবার কম্পনের তীব্রতা ছিল ৭.২, যা গত ২৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর বলে জানা যায়। তবে সচেতনতার জন্যই বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো সম্ভব হয়।
সেই থেকে লাগাতার একের পর এক কম্পনের সাক্ষী থেকেছে তাইওয়ান। ২৩ এপ্রিল মাত্র কয়েক মিনিটের ব্যবধানে ভোররাতে ৬.১, ৬.০ তীব্রতায় ভূমিকম্প হয় সেখানে। তার পর সকালে আবারও ৫.৮ তীব্রতায় ভূমিকম্প ঘটে। সেখানেই শেষ নয়, গত কয়েক দিনে পর পর কম্পন অনুভূত হয়েছে সেখানে। সবমিলিয়ে এখনও পর্যন্ত ১৪ জনের প্রাণহানি হয়েছে। ৩ এপ্রিল থেকে এখনও পর্যন্ত ১১০০টি আফটার শক অনুভূত হয়েছে তাইওয়ানে।
ফিলিপিন্স সাগর এবং ইউরেশিয়ান টেকটোনিক পাতের সংযোগস্থলে অবস্থিত তাইওয়ান। প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ঘোড়ার খুরের মতো দেখতে ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকাগুলির মধ্যে অন্যতম তাইওয়ান। সেখানে মাটির নীচে পাতগুলি সর্বদাই প্রায় সচল। তার জেরেই প্রায়শ ভূমিকম্প ঘটে। পাশাপাশি পার্বত্য এলাকায় অগ্ন্যুৎপাতও ঘটতে থাকে।