নয়াদিল্লি: করোনার কারণে যে শিশুরা নিজের বাবা-মাকে হারিয়ে অনাথ হয়েছে, তাদের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য নির্দেশ দিল সুপ্রিমকোর্ট। প্রতিটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে অনাথ শিশুদের সম্পর্কে তথ্য নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে আপলোড করতে বলেছে সর্বোচ্চ আদালত। রাজ্যগুলিকে একই কথা বলেছে জাতীয় শিশু অধিকার রক্ষা কমিশনও।


দেশে করোনা পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর। চারদিকে স্বজন হারানোর হাহাকার। ৩ লক্ষের বেশি পরিবারে নেমে এসেছে বিপর্যয়। বহু ঘর-সংসার শূন্য করে দিয়েছে করোনা। এই পরিস্থিতিতে কোভিডের থাবায় অনাথ হওয়া শিশুরা কেমন আছে? জানতে চাইল সুপ্রিম কোর্ট। করোনা যে সব শিশুরা বাবা-মাকে কেড়ে নিয়েছে, তাদের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য এগিয়ে এল সর্বোচ্চ আদালত। 


দেশের সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, অবিলম্বে করোনার কারণে অনাথ শিশুদের ত্রাণ ও সাহায্য দিতে হবে। এই অনাথ শিশুদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য শনিবারের মধ্যে জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের ওয়েবসাইটে তোলারও নির্দেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। 


পাশাপাশি, ‘ন্যাশনাল কমিশন ফর প্রোটেকশন অব চাইল্ড রাইটস’ (এনসিপিসিআর)-ও এই একই নির্দেশ দিয়েছে। জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন রাজ্যগুলিকে দেওযা চিঠিতে বলেছে,  যে শিশুরা করোনার কারণে তাদের বাবা-মাকে হারিয়েছে বা বাবা-মায়ের মধ্যে কোনও একজনকে হারিয়েছে, তাদের সম্পর্কে তথ্য বাল স্বরাজ পোর্টালে আপলোড করতে হবে। এরপর তাদের চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির সামনে হাজির করানোর নির্দেশও দিয়েছে জাতীয় শিশু অধিকার রক্ষা কমিশন।  


সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার সূত্রে খবর, করোনায় বাবা-মাকে হারিয়ে দেশে অনাথ হয়েছে ৫৭৭ জন শিশু। অনাথ শিশুদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছে দিল্লি, অন্ধ্রপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ ছত্তীসগঢ়, পাঞ্জাব সরকার। অনাথ শিশুদের বিনামূল্যে শিক্ষা এবং মাসোহারার ব্যবস্থা করা হয়েছে এই সরকারগুলির তরফে।


উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি রাজ্যে অনাথ শিশুদের দেখভালের দায়িত্ব নিয়েছে রাজ্য় সরকার। ফ্রি রেশন ও মাসিক পেনশনেরও ঘোষণা করা হয়েছে। সম্প্রতি টাটা গোষ্ঠীর তরফে জানানো হয় যেসমস্ত কর্মীরা কোভিড আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন, তাঁদের পরিবারকে বেতনের পাশাপাশি সন্তানদের পড়াশোনারও দায়িত্ব নেওয়া হবে। 


পাশাপাশি শনিবার প্রধানমন্ত্রী এ প্রসঙ্গে ট্যুইট করেন, বলেন, করোনার কারণে বহু শিশু তাদের বাবা-মাকে হারিয়েছে। সরকার ওই শিশুদের রক্ষণাবেক্ষণের পাশাপাশি তাদের জীবন যাতে সম্মানজনক হয়, তারা যাতে বিভিন্ন সুযোগ নিতে পারে, তা নিশ্চিত করবে।  পিএম কেয়ার্স থেকে অনাথ শিশুদের শিক্ষা ও অন্যান্য সাহায্য করা হবে। '


প্রধানমন্ত্রীর দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, অনাথ শিশুদের শিক্ষার সব খরচ দেওয়া হবে পিএম কেয়ার্স ফান্ড থেকে। ১৮ বছর বয়স হলে মাসিক স্টাইপেন্ড দেওয়া হবে। ২৩ বছর বয়স হলে দেওয়া হবে ১০ লক্ষ টাকা। উচ্চশিক্ষার জন্য বিনাসুদে ঋণ দেবে কেন্দ্রীয় সরকার। করোনার কারণে অনাথদের ৫ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্যবিমাও বিনামূল্যে করে দেবে কেন্দ্র।