তামিলনাড়ু:  তামিলনাড়ুর কোয়েম্বাটোর জেলার এক বেসরকারি স্কুলকে ঘিরে তীব্র নিন্দার ঝড়। মাসিক চলছিল বলে এক ১৩ বছরের ছাত্রীর সঙ্গে বৈষম্য করা হয়েছে পরীক্ষা চলাকালীন। তাঁকে ক্লাসরুমের বাইরে বসে পরীক্ষা (Dalit Student) দিতে বাধ্য করা হয়েছিল। সেঙ্গুট্টাইপলায়ম গ্রামের স্বামী চিদ্ভবানন্দ ম্যাট্রিক হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলে ঘটেছে এই ঘটনা। অষ্টম শ্রেণির এই ছাত্রীকে (Tamil Nadu News) এই স্কুলে ৭ এপ্রিল ও ৯ এপ্রিলের বিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞানের পরীক্ষা দিতে বাধ্য করা হয় ক্লাসরুমের বাইরে বসে।

স্কুলের এই কাণ্ড প্রকাশ্যে এসেছে সেই ছাত্রীর মা স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিবাদ করার পরে। এই বিবাদের ভিডিয়োই সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। আবেগঘন সেই ফুটেজে দেখা যাচ্ছে সেই ছাত্রীর মা স্কুল কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞাসা করছেন কেন তারা এমন বৈষম্যমূলক আচরণ করেছেন তাঁর মেয়ের সঙ্গে ? ৫ এপ্রিল সেই ছাত্রী তাঁর বয়ঃসন্ধিকালে উপনীত হয়েছে, আর সেই কারণে তাঁকে টানা দু'দিন ক্লাসরুমের বাইরে বসে পরীক্ষা দিতে বাধ্য করা হয়েছে।

এই ভিডিয়ো ঘিরে জনরোষ তুঙ্গে উঠেছে। স্কুলের এই কাজকে অত্যন্ত ঘৃণ্য এবং নিকৃষ্ট বলে মনে করছেন অন্যান্য অভিভাবক, সক্রিয় কর্মী এবং সম্প্রদায়ের সদস্যরা। স্কুলের এই ধরনের আচরণ খুবই ক্ষতিকর এবং অসম্মানজনক। স্থানীয়রা এই বিষয়ে সাব কালেক্টরের কাছে অভিযোগ দায়ের করার পরিকল্পনা করেছেন বলে জানা গিয়েছে। সংবাদসূত্রে জানা গিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে এই বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইছেন স্থানীয় বাসিন্দারাও।

কোয়েম্বাটোরের জেলাশাসক পবনকুমার জি গিরিয়াপ্পানাভর জানিয়েছেন যে গ্রামীণ পুলিশ এই বিষয়ে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে। মাধ্যমিক স্কুলের ইনস্পেক্টরদের এই বিষয়ে রিপোর্ট দাবি করা হয়েছে। জেলাশাসক জানিয়েছেন এই স্কুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে এবং স্কুল কর্তৃপক্ষ দোষী সাব্যস্ত হলে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে।

একজন দলিত সমাজকর্মী জানিয়েছেন যে ৭ এপ্রিল পরীক্ষা দিয়ে বাড়িতে আসার পরে এই ঘটনা মাকে জানিয়েছিল সেই ছাত্রী। আর তা শুনে পরের দিন স্কুলে নিজেই যান তাঁর মা এবং দেখেন যে তাঁর মেয়েকে পরীক্ষার সময় ক্লাসরুমের বাইরে বসিয়ে রাখা হয়েছে। তিনি সমস্ত ঘটনাটি মোবাইলের ক্যামেরায় রেকর্ড করেন এবং সেই ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে তুমুল ভাইরাল হয়েছে।

স্কুল ইনস্পেক্টরের রিপোর্ট পর্যালোচনা করার পরে তামিলনাড়ু শিক্ষাবিভাগ একটি আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেবে বলেই আশা করা হচ্ছে। এলাকার তথা রাজ্যের সমস্ত স্কুলে ইতিমধ্যেই এই ঘটনার প্রেক্ষিতে জাতিভেদ এবং ঋতুস্রাব নিয়ে সামাজিক 'স্টিগমা' দূর করার ব্যাপারে আলোচনা চলছে।