গাজিয়াবাদ: 'যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে', এই প্রবাদ বঙ্গ সমাজে শোনা যায়। কিন্তু আজকের কর্পোরেট যুগে এটা সবসময় সম্ভব হয়ে ওঠে না। চাকরি সামলে সংসার সামলানোটাও একটা লড়াই। তবে স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে সামলালে তা হয়তো কিছুটা কাটিয়ে ওঠা যায়। কিন্তু যদি স্ত্রী-কেই সবটা করতে হয় হলে সমস্যা বাড়ে বৈ কমে না। তেমনই একটি ঘটনার জেরে চরম সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হলেন এক শিক্ষিকা।
দিল্লির একটি কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের ৩১ বছর বয়সী এক শিক্ষিকা গাজিয়াবাদের বসুন্ধরায় তার বাড়িতে আত্মহত্যা করে মারা যাওয়ার একদিন পর, সোমবার পুলিশ তার স্বামী এবং তার শ্বশুরকে গ্রেফতার করেছে। মহিলার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে যৌতুকের মামলা দায়েরের পর এই গ্রেফতার করা হয়েছে।
মৃত্যুর কয়েক মিনিট আগে, অন্বিতা শর্মা রবিবার তার ভাই অমিতকে একটি মেসেজ পাঠিয়েছিলেন। সেখানে লেখা ছিল, 'আমি তোকে খুব ভালোবাসি ভাই। দয়া করে আমাকে ক্ষমা করে দিস এবং সবার যত্ন নিস"। ভাই অমিত বলেন, ২০১৯ সালে গৌরব কৌশিককে বিয়ে করার কয়েক মাস পর থেকেই অন্বিতা তার দাম্পত্য জীবনে সমস্যার সম্মুখীন হতে শুরু করে এবং ঘন ঘন ঝগড়া হতে থাকে। তিনি এও বলেন, "আমরা অন্বিতাকে বিবাহবিচ্ছেদের কথা বিবেচনা করতে বলেছিলাম কিন্তু কৌশিক তাকে ফিরে আসতে রাজি করান"।
নিজের বাবাকে করা মেসেজের (সুইসাইড নোট) লেখা ছিল যে- "আমি আর সহ্য করতে পারছি না, তাই আমি এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যাচ্ছি। আমার স্বামী এমন একটি সুন্দরী মেয়ে চেয়েছিলেন যে ঘরের সমস্ত কাজ করতে পারবে এবং অর্থ উপার্জনও করতে পারবে। আমি আমার সাধ্যমতো সবকিছু করেছি কিন্তু এই লোকটি সবসময় দোষ খুঁজে বেড়াত। প্রতিটি তর্ক-বিতর্কে, সে আমাকে এবং আমার পরিবারকে কটূক্তি করত... যে সে আমাদের সবার চেয়ে বেশি টাকা আয় করে... বিয়ের পর সে আমাকে আর পড়াশোনা করতে দেয়নি এবং আমার সব অ্যাকাউন্টে তার অ্যাক্সেস ছিল। সে আমাকে নয়, আমার চাকরিকে বিয়ে করেছে।"
মেয়ের এমন পরিণতির পরেই তাঁর বাবা অনিল শর্মা পুলিশে জামাই গৌরব কৌশিক ও তাঁর মা–বাবার নামে ‘পণের জন্য শারীরিক নির্যাতন ও আত্মহত্যায় প্ররোচনা’ দেওয়ার এফআইআর দায়ের করেন।তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে গৌরব ও তাঁর বাবা সুরেন্দ্রকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে