নয়া দিল্লি: বিশ্বজুড়েই যৌন অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে একাধিক দেশে। সেই প্রেক্ষাপটে এবার যৌন অপরাধে (Sex Offenders) লিপ্ত ব্যক্তিদের নয়া শাস্তি দিতে নতুন আইন আনতে চলেছে থাইল্যান্ড (Thailand)। মঙ্গলবার সে দেশের সরকার (Govt) একটি বিল পাস করেছে যেখানে বলা হয়েছে যে যৌন অপরাধীদের ওষুধ দিয়ে আইনগতভাবে পুরুষত্বহীন করা হবে।
সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুসারে, থাই সিনেটে পাস করা বিলে বলা হয়েছে যে এটি শুধুমাত্র একজন মানসিক বিশেষজ্ঞ এবং ওষুধ বিশেষজ্ঞের অনুমোদন এবং সংশ্লিষ্ট যৌন অপরাধীর সম্মতি নিয়ে তবেই এই সাজা দেওয়া হবে। রিপোর্টে এও দাবি করা হয়েছে, অপরাধীরা যারা বারবার যৌন অপরাধে লিপ্ত হয়, তাদের ক্ষেত্রে ইনজেকশন প্রয়োগ করে টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কমিয়ে দেওয়া হবে। তবে অপরাধী হলেও এক্ষেত্রে তাদের সম্মতি নেওয়া হবে।
থাইল্যান্ডের একটি সংবাদমাধ্যম ব্যাংকক পোস্টের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক্ষেত্রে যৌন অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা যদি এই চিকিৎসা নিতে সম্মতি দেন তবেই তাঁদের ইনজেকশন দিয়ে যৌন ক্ষমতা কমিয়ে দেওয়া হবে। বিনিময়ে তাদের শাস্তি অনেকটা মকুব করবে আদালত।
আরও পড়ুন, উদ্বেগ বাড়িয়ে রাজ্যে একদিনে করোনায় ৫ জনের মৃত্যু
সে দেশের সংসদে যৌন অপরাধ এবং ধর্ষণ প্রতিরোধে একাধিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছিল। এই বিলের প্রস্তাব সেখানে সর্বসম্মতিক্রমে পাস হওয়ার পর যৌন অপরাধের জন্য এমন শাস্তিমূলক পদ্ধতি আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই ব্যক্তির বারবার যৌন অপরাধে লিপ্ত হওয়া ঠেকাতেই এই ভাবনা বলে জানান হয়েছে ওই প্রকাশিত প্রতিবেদনে।
তবে কীভাবে এই কাজটি করা হবে কিংবা কী কী ওষুধ প্রয়োগ করা যেতে পারে এ বিষয়ে পদ্ধতি সেখানকার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করবে বলে জানান হয়েছে।
ব্যাংকক পোস্টের তরফে জানান হয়েছে মন্ত্রিসভার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের পর রয়্যাল গেজেটে তা প্রকাশিত হলে এই বিলটিকে আইনে রূপান্তরিত করা হবে। যদি রাসায়ানিকের সাহায্যে যৌন ক্ষমতা কেড়ে নেওয়ার শাস্তি নতুন নয়। এর আগে দক্ষিণ কোরিয়া, পাকিস্তান, পোল্যান্ড এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আটটি রাজ্যে এই নিয়ম রয়েছে। এছাড়াও নরওয়ে, ডেনমার্ক এবং জার্মানির একাধিক দেশে যৌন অপরাধের বিরুদ্ধে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে যৌন ক্ষমতা কমিয়ে দেওয়ার নিয়ম রয়েছে।
যদিও অনেক বিশেষজ্ঞের মতে এই ধরনের সিদ্ধান্তে অপরাধীদের মধ্যে হিংস্রতা আরও বৃদ্ধি পায়। মনোবিদরা জানান এমন ক্ষেত্রে ব্যক্তিরা মেয়েদের ঘৃণা করতেও শুরু করে। প্রচণ্ড সেই রাগের বশে অনেকেই ফের অপরাধী মানসিকতায় ফিরে যায়। মেয়েদের প্রতি হিংস্রতা থেকে নতুন অপরাধে লিপ্ত হয় তারা। যদিও একাংশ মনে করেন, যেভাবে সমাজে ধর্ষণ বেড়ে চলেছে সেখানে এমন কঠিন শাস্তির প্রয়োজন রয়েছে। সাজার ভয়ে এমন যৌন অপরাধ করার আগেও যেন দু'বার ভাবতে বাধ্য হয় অপরাধীরা।