নয়া দিল্লি: যুদ্ধ ঘিরে উত্তপ্ত ইজরায়েল (Israel)। কিন্তু তার কি কোনও প্রভাব ভারতেও পড়তে পারে? বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, এই যুদ্ধ চললে বাড়তে পারে তেলের দাম (Oil Price), যার সরাসরি প্রভাব পড়বে আমাদের জীবনে। আমদানি-রফতানির ক্ষেত্রেও প্রভাব পড়তে পারে এই যুদ্ধের (War)।


ইজরায়েল-গাজা (Gaza)-প্যালেস্তাইন (Palestine), এখন মৃত্যুপুরী। এই অবস্থায়, ইজরায়েল-হামাসের যুদ্ধের প্রভাব পড়তে চলেছে বিশ্ব-অর্থনীতির উপর। ইজরায়েল থেকে প্রায় ৪ হাজার কিলোমিটার দূরের ভারতও তার ব্যতিক্রম নয়।


কারণ, ভারতের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য সহযোগী ইজরায়েল। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হলে ভারতের সমস্যা বাড়তে পারে। ইজরায়েল তেল রফতানিকারী মূল দেশ না হলেও, যুদ্ধের প্রভাব পড়তে পারে তেল সরবরাহে। 


ইজরায়েলের বিরুদ্ধে হামাসকে মদত দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ইরানের বিরুদ্ধে। সেক্ষেত্রে, তেহরানের বিরুদ্ধে ইজরায়েল প্রতিশোধমূলক ব্য়বস্থা নিলে হরমুজ প্রণালী বন্ধ হয়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে প্রভাব পড়তে পারে তেল সরবরাহে।


এর পাশাপাশি, ইরানও যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লে সেক্ষেত্রে তেল পরিবহণের পাশাপাশি পণ্য পরিবহণের বীমার খরচও বাড়িয়ে দিতে পারে।  এর ফলে, অন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়লে, তার প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়বে বাজারে।


ভারত তার প্রয়োজনীয় অপরিশোধিত তেলের বেশিরভাগই আমদানি করে। তেলের দাম বৃদ্ধির অর্থ মুদ্রাস্ফীতি। ফলে, খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।


ইজরায়েল-হামাসের এই যুদ্ধ ঘিরে কার্যত আড়াআড়ি ভাগ হয়ে গেছে বিশ্ব। হামাসের পাশে দাঁড়িয়েছে সৌদি আরব, তুরষ্ক, ইরান, মিশর, জর্ডন, আলজিরিয়া, ইয়েমেনের মতো দেশ। উল্টোদিকে ইজরায়েলের পাশে দাঁড়িয়েছে আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, জাপানের মতো একাধিক দেশ। ভারতকেও পাশে পেয়েছে ইজরায়েল।


যুদ্ধের আবহে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে ফোন করে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। ২০১৭ সালে ইজরায়েল সফরে যান নরেন্দ্র মোদি। তখন থেকেই নেতানিয়াহুর সঙ্গে মোদির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। ২০১৭-র সফরেই, ইজরায়েলের থেকে NSO-র তৈরি স্পাইওয়্যার, পেগাসাস কেনার অভিযোগ ওঠে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে। 


ইজরায়েলের থেকে আয়রন ডোম কেনারও চুক্তি করেছে ভারত। অন্যদিকে, আমেরিকা, ব্রিটেনের মতো দেশ ইজরায়েলের পাশে দাঁড়ানোয় মধ্যপন্থা নিচ্ছে রাশিয়া ও চিন।


ইজরায়েলে অনেক কিছু রফতানি করে ভারত। যেমন, চামড়া, জামাকাপড়, বিভিন্ন ধাতু, দামি পাথর, রাসায়নিক পদার্থ, ওষুধ ও চিকিৎসার যন্ত্রপাতি ইজরায়েলে রফতানি করে ভারত।


এশিয়ায় ইজরায়েলের তৃতীয় বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার ভারত। সেখান থেকে আমদানি করা হয়, প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম, কৃষিকাজের যন্ত্রপাতি, খনিজ পদার্থ, জল শোধনের যন্ত্রাংশ। এই পরিস্থিতিতে ভারতের অবস্থান কী হবে, তা নিয়েই এখন টানাপোড়েন!