কলকাতা: এ যেন থেকেও নেই। কোটি টাকার একমো মেশিন থাকলেও, স্রেফ প্রশিক্ষিত কর্মীর অভাবে তা ব্যবহার করা যাচ্ছে না কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে। করোনাকালে এরকম জীবনদায়ী একটি মেশিন কেন ব্যবহার করা যাচ্ছে না, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। তবে কর্তৃপক্ষের দাবি, দ্রুত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে পরিষেবা শুরু করা হবে।


যন্ত্র আছে, তবে নেই যন্ত্রী। স্রেফ এইজন্যই এক-আধ দিন নয়, দু’ মাস ধরে পড়ে রয়েছে জীবনদায়ী একমো মেশিন। অব্যবস্থার এই ছবি রাজ্যের প্রথম সারির সরকারি কোভিড হাসপাতাল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে।

কী কাজে ব্যবহার করা হয় একমো মেশিন?

ফুসফুসের কার্যক্ষমতা কমে গেলে কৃত্রিম ফুসফুসের সাহয্যে রোগীকে সুস্থ করে তোলার প্রক্রিয়ার নাম একমো।অক্সিজেনহীন রক্তকে দেহ থেকে বের করে কৃত্রিম ফুসফুসে তা ঢোকানো হয়। অক্সিজেন যুক্ত এবং কার্বন ডাই অক্সাইড বিয়োজিত হওয়ার পরে শুদ্ধ রক্ত যন্ত্রের মধ্যে হৃৎপিণ্ডে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখান থেকে রক্ত ঢোকানো হয় শরীরে।

কোভিড নিউমোনিয়ার কারণে ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হলে একমো পদ্ধতিতে চিকিৎসায় সুস্থ হওয়ার নজির রয়েছে। এরকম গুরুত্বপূর্ণ এবং জীবনদায়ী দুটি যন্ত্র কেনা হলেও তা চালানোর মতো প্রশিক্ষিত কর্মীই নেই মেডিক্যালে। তাই ধুলো জমছে কোটি টাকারও বেশি অত্যাধুনিক মেশিনে। আর কোভিড আক্রান্ত গুরুতর অসুস্থরা এই পরিষেবা পেতে কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করে বেসরকারি হাসপাতালের দ্বারস্থ হতে বাধ্য হচ্ছেন।

মেডিক্যাল কলেজে থেকেও মিলছে না একমো পরিষেবা। পরিকাঠামো তৈরি না করে কেন কোটি টাকার যন্ত্র এভাবে ফেলে রাখা হল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের সুপার ইন্দ্রনীল বিশ্বাস জানিয়েছেন, একমো চালু করার ক্ষেত্রে মূল সমস্যা প্রশিক্ষত কর্মীর। রোজ তিন শিফটে চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মী দেওয়াটাই চ্যালেঞ্জ। মেডিকা হাসপাতালে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মেডিকা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট কুণাল সরকার বলেন, আমাদের প্রশিক্ষণ দিতে আপত্তি নেই, এসএসকেএমের একটি ইউনিট এসে ট্রেনিং নিয়ে গেছে, একমো চালাতে গেলে হাড়ভাঙা খাটুনির প্রচুর লোক লাগে। এর জন্য দায়িত্ব নিতে হয়।