সুন্দরবন: ইয়াসের সঙ্গে কটালের দাপট। দুর্যোগের ধাক্কায় সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প এলাকায় ছিঁড়ল নাইলনের ফেন্সিং। অরক্ষিত হয়ে পড়েছে প্রায় ৫০ কিলোমিটার বনাঞ্চল। এদিকে পাথরপ্রতিমার ব্রজবল্লভপুরে পুকুর থেকে উদ্ধার হল কুমির। জোয়ারের জলে ফের ভাসল গোসাবা।
আক্ষরিক অর্থেই জলে কুমির, ডাঙায় বাঘ। এমন বিপদের সঙ্গে যাঁদের ঘর করতে হয়, সুন্দরবনের সেই সব বাসিন্দাদের বিপদের মাত্রাকে চরমে নিয়ে গিয়েছে ঘূর্ণিঝড় ও ফুলেফেঁপে ওঠা কটালের জল। কোথাও লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে কুমির। কোথাও ব্যাঘ্র প্রকল্প এলাকার ফেন্সিং ছিঁড়ে যাওয়ায় কার্যত এক হয়ে গেছে জল-জঙ্গল। নদীপাড়ের বাসিন্দাদের মধ্যে চেপে বসেছে আতঙ্ক। বাঘ বা অন্য পশুরা যাতে লোকালয়ে না চলে আসতে পারে, তার জন্য দেওয়া হয়েছিল ফেন্সিং।
সুন্দরবন জুড়ে এখন শুধু ইয়াসের দগদগে ক্ষত। গোসাবা থেকে পাখিরালয়, ঝড়খালি থেকে কুমীরমাড়ি। যেদিকে চোখ যায় শুধুই জল আর জল। একাধিক জায়গায় জলের তোড়ে ভেঙে গিয়েছে নদী বাঁধ। হু হুকরে জল ঢুকছে। ১৫-২০টি গ্রাম জলের তলায়। গোসাবা, পাখিরালয়ের নিচু এলাকার বেশিরভাগ একতলা বাড়িতে জল ঢুকে গেছে। রাস্তা না নদী আলাদা করে বোঝাই যাচ্ছে না। আর এই আবহে নতুন আতঙ্ক। সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ঝড়ের তাণ্ডবে প্রায় ৫০ কিলোমিটার এলাকায় ছিঁড়েছে নাইলন ফেন্সিং। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শুরু হয়েছে জাল মেরামতির কাজ। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানতে ওড়ানো হয় ড্রোন। দুর্যোগের জেরে বন দফতরের ক্যাম্পেও ঢুকেছে জল। তার ফলে নজরদারি চালাতেও হচ্ছে সমস্যা।
কটালের জল ঢুকেছে পাথরপ্রতিমা ভগবত্পুর কুমির প্রকল্পেও। এই মুহূর্তে ৩২৩টি কুমির রয়েছে সেখানে। শুক্রবার সকালে পাথরপ্রতিমার ব্রজবল্লভপুরে একটি পুকুর থেকে উদ্ধার হয় একটি কুমির। ১২ ফুট লম্বা কুমিরটিকে উদ্ধার করেন বন দফতরের কর্মীরা। কটালের জেরে জগদ্দল নদী থেকে কুমিরটি লোকালয়ে ঢুকে পড়ে বলে মনে করছে বন দফতর। অন্যদিকে, জোয়ারের জলে শুক্রবার নতুন করে প্লাবিতে হয় রাঙাবেলিয়া, কুমিরমারি, গোসাবার একাংশ। দুর্যোগ কাটলেও, দুর্ভোগ শেষ হচ্ছে না গোসাবাবাসীর।