নয়াদিল্লি: বিদেশি মুদ্রা বিনিময় আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ। তার জেরে সোমবারই টানা আট ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে শিল্পপতি অনিল আম্বানিকে (Anil Ambani)। এবার তাঁর স্ত্রী টিনা আম্বানিও (Tina Ambani) হাজিরা দিলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)-এর দফতরে। এই সপ্তাহের শেষে টিনাকে ইডি-র দফতরে হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে মঙ্গলবারই তিনি ইডি-র দফতরে পৌঁছে যান। ফের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হবে অনিলকেও।


ভারতের বাইরে কত সম্পত্তি রয়েছে এবং করফাঁকির স্বর্গরাজ্যে কত বিনিয়োগ রয়েছে, তা নিয়ে সোমবারই অনিলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ইডি। তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, জিজ্ঞাসাবাদে অধিকাংশ প্রশ্নের উত্তরই এড়িয়ে গিয়েছেন অনিল। তাই আবারও তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় ইডি। তবে তার আগে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে টিনাকে। গতকালই ডাকা হয়েছিল টিনাকে। কিন্তু তিনি সময় চেয়েছিলেন। সেই মতো নতুন করে তলব করা হয়। তার পরই মঙ্গলবার ইডি-র দফতরে পৌঁছে যান তিনি।


ভারতের বাইরে কত সম্পত্তি রয়েছে এবং করফাঁকির স্বর্গরাজ্যে কত বিনিয়োগ রয়েছে, তা নিয়ে সোমবারই অনিলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ইডি। তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, জিজ্ঞাসাবাদে অধিকাংশ প্রশ্নের উত্তরই এড়িয়ে গিয়েছেন অনিল। তাই আবারও তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় ইডি। তার আগে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে টিনাকে।


আরও পড়ুন: Meta Threads Launch: ট্যুইটারের বিকল্প আনছে মেটা, ৬ জুলাই আসছে 'থ্রেডস'


বিদেশি মুদ্রা বিনিময় আইনের এই মামলাটি নতুন। অভিযোগ, ২০০৭ সাল নাগাদ বিদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা দেশে এনেছিলেন অনিল। বিদেশি বিনিয়োগ হিসেবে উল্লেখ করা হয় ওই বিপুল পরিমাণ টাকাকে। বিদেশ থেকে ঋণে টাকা তুলে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ আইনের আওতায় ব্যাঙ্ক মারফত ওই বিপুল পরিমাণ টাকা তাঁদের হাতে এসে পৌঁছয় বলে সেই সময় দাবি করেন অনিল এবং তাঁর সহযোগীরা। ঠিক কত টাকা আনা হয়েছিল, তা যদিও স্পষ্ট ভাবে জানা যায়নি। তবে ইডি সূত্রে দাবি, টাকার অঙ্ক প্রায় ২০০০ কোটি। সত্যিই অনিল ঋণ নিয়েছিলেন, নাকি ঘুরপথে বিদেশে নিয়ে যাওয়া টাকাকেই ফিরিয়ে এনেছিলেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।


বাতিস্তে আনলিমিটেড-সহ মোট ১৮টি বিদেশি সংস্থার লেনদেন খতিয়ে দেখছে ইডি। এই সব সংস্থাগুলিইর সঙ্গেই অনিলের সংযোগ উঠে এসেছে বলে অভিযোগ। করফাঁকির স্বর্গরাজ্য ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড, সাইপ্রাস এবং জার্সিতে অবস্থিত ওই সবক’টি সংস্থাই। কিন্তু সবগুলির প্রতিষ্ঠাই ২০৭৭ থেকে ২০০৮ সালের মধ্যে হয়।  


অনিল ধীরুভাই আম্বানি গ্রুপের বিরুদ্ধে আগেই নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করেছে। সেই মামলার প্রক্রিয়া চলছে এই মুহূর্তে। আয়কর দফতরের তরফেও অনিলের সংস্থার বিরুদ্ধে পৃথক তদন্ত চালানো হচ্ছে। কালো টাকা প্রতিরোধ আইনের আওতায় করফাঁকি দিতে অনিল কত টাকা বিদেশে পাঠিয়েছেন, ভুয়ো সংস্থার মাধ্যমে ঘুরপথে কী ভাবে সেই টাকা বিদেশে বিনিয়োগ করা হয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে আয়কর দফতর। এর আগে ২০২০ সালেও অনিলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ইডি। সেবার ইয়েস ব্যাঙ্ক এবং তার প্রাক্তন চেয়ারম্যান রানা কপূরের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপের একটি মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।  অভিযোগ ওঠে, অনিলের সংস্থাকে ১২,৫০০ কোটি টাকা দিয়েছিল ইয়েস ব্যাঙ্ক। গোটা বিষয়টিকে যদিও ইয়েস ব্যাঙ্ক ঘুষ মামলা হিসেবেই  উল্লেখ করা হয়। এফআইআর-এ অনিলের নাম ছিল না।


২০২০ সালের অগাস্ট মাসে আয়কর দফতরের তরফেও নোটিস ধরানো হয় অনিলকে। কালো টাকা প্রতিরোধ আইনে নোটিস ধরানো হয়। জরিমানাও দাবি করা হয় সেই সময়। অভিযোগ ছিল, সুইস ব্যাঙ্কের দু’টি অ্যাকাউন্টে ৮৪০ কোটি টাকা গচ্ছিত থাকার কথা রেকর্ডে উহ্য রেখেছিলেন অনিল। ৪২০ কোটি টাকার করফাঁকি দেন তিনি। বম্বে হাইকোর্ট যদিও ওই নোটিস এবং জরিমানায় স্থগিতাদেশ দিয়েছে।