কলকাতা: মন্ত্রিত্ব পদ ছাড়লেও শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে এখনও আলোচনার পথ খোলা। দাবি সৌগত রায়ের।শুক্রবার মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। শনিবার তাঁর বাবা শিশির অধিকারীর সঙ্গে ফোনে কথা বললেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। এর আগে শুভেন্দুর সঙ্গে দু’বার বৈঠক করেছিলেন সৌগত রায়। তারপরও রাজ্য সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন শুভেন্দু। যদিও, তৃণমূল এখনও দাবি করছে, আলোচনার রাস্তা বন্ধ হয়নি।
সৌগত এদিন বলেছেন, এখনও আলোচনার পথ খোলা আছে। ওর মা অসুস্থ, তাই আসতে পারছে না।
অন্যদিকে, বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় বলেছেন, এটা তৃণমূলের অভ্যন্তরীন বিষয়। তবে তৃণমূলের সরকারের কাজে শুধু মানুষ নন, দলের নেতা মন্ত্রীরাও অসন্তুষ্ট।
শুভেন্দুর বাবা শিশির অধিকারী কাঁথির তৃণমূল সাংসদ এবং পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা তৃণমূল সভাপতি। শুভেন্দুর এক ভাই দিব্যেন্দু তমলুকের তৃণমূল সাংসদ। শুভেন্দুর আরেক ভাই সৌম্যেন্দু কাঁথি পুরসভার প্রশাসক।
শুভেন্দুর মন্ত্রিত্ব ছাড়া নিয়ে তাঁরা কেউ মুখ খোলেননি। তৃণমূলও তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছে। শনিবার শিশির অধিকারীর সঙ্গে ফোনে কথা বলেন সৌগত রায়।
শুভেন্দুকে নিয়ে গোড়া থেকেই তৃণমূলের অন্দরে শোনা যাচ্ছে দুই সুর। একদিকে যখন সৌগত রায় শুভেন্দুর মানভঞ্জনে তাঁর সঙ্গে বৈঠক করছিলেন, তখন শুভেন্দুর বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাচ্ছিলেন আরেক তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। শুভেন্দু মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পর কল্যাণের আক্রমণের ধার আরও বেড়েছে। তিনি বলেছেন, ২০১৬-র ভোটের আগে তে মমতা বলেছিলেন সব কেন্দ্রে প্রার্থী তিনিই। সেখানে কিন্তু শুভেন্দু কোনওভাবেই বললেনি তিনি আলাদাভাবে লড়েছেন। (সাহস দেখাননি)। কেউ যদি বিজেপিতে যায় তা ব্যক্তিগত, সারদা-নারদায় যাদের নাম জড়িয়েছে তারাই এখন বিজেপিতে।
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জেলা হুগলির তৃণমূল মুখপাত্রের গলায় আবার শোনা গেছে উল্টো সুর। উত্তরপাড়ার বিধায়ক এবং হুগলি জেলার তৃণমূল মুখপাত্র বলেছেন, আমি মনে করি শুভেন্দু তৃণমূলে মমতা-পরবর্তী প্রজন্মের মধ্য সবচেয়ে বড় নেতা। তিনি যদি শেষ পর্যন্ত দল ছাড়লে অবশ্যই ক্ষতি হবে। আমাদের দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখার চেষ্টা করতে হবে।আমরা সেটাই চেষ্টা করছি।
এসবের মধ্যে শুভেন্দুকে নিয়ে জল্পনা জিইয়ে রাখছে বিজেপি-ও। বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন,উনি বিজেপিতে আসবেন কিনা জানি না। উনি আগে তৃণমূল ছাড়ুন, তারপর বিজেপি আগ্রহ দেখাবে।
সব মিলিয়ে শুভেন্দু অধিকারীর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে ধোঁয়াশা এখনও অব্যাহত। কাঁথির অধিকারী বাড়ির মেজো ছেলে কোন পথ বেছে নেবেন? কোন দিকে পা বাড়াবেন? সেই জল্পনা ঘিরেই তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি।