দীপক ঘোষ, অনির্বাণ বিশ্বাস, শিবাশিস মৌলিক: টাকা নিয়ে সংসদে আদানিদের বিরুদ্ধে প্রশ্ন করার অভিযোগ। সেই নিয়ে নীতি কমিটির সামনে হাজিরও হয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে তাঁকে 'ব্যক্তিগত' এবং 'অনৈতিক' প্রশ্ন করার অভিযোগ। প্রতিবাদে বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন আগেই। তার পর ফের একবার সংসদের নীতি কমিটিকে একহাত নিলেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। এর পাল্টা মহুয়াকে ফের আক্রমণ করতে দেখা গেল বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবেকে।


রবিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় নীতি কমিটির চেয়ারম্যান বিনোদ সোনকরকে নিশানা করেন মহুয়া। তিনি লেখেন, 'বিজেপি আমার বিরুদ্ধে অপরাধ মামলার পরিকল্পনা করছে জেনে শিহরণ হচ্ছে। ওদের স্বাগত-শুধু জেনে রাখুন, আমার ক'জোড়া জুতো রয়েছে জানতে চাওয়ার আগে, ১৩,০০০০ কোটির কয়লা দুর্নীতি মামলায় CBI, ED-র উচিত আদানির বিরুদ্ধে মামলা করা'।


মহুয়া আরও লেখেন, 'বিজেপি-কেও বলে রাখি, মিথ্যা অভিযোগ মহিলা সাংসদকে বের করে দেওয়ার আগে জেনে রাখুন, নীতি কমিটির সামনে হাজিরার সময় কথাবার্তার রেকর্ডের নিখুঁত প্রতিলিপি রয়েছে আমার কাছে। চেয়ারম্যান যে সস্তা, অশালীন এবং অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্ন করেছেন, বিরোধীদের প্রতিবাদ, আমার প্রতিবাদ-সব সাদা-কালো হিসেব। নির্লজ্জ এবং  উপহাসাম্পদ '।



মহুয়ার এই পোস্টের পরই তাঁকে ফের নিশানা করেন নিশিকান্ত। লেখেন, 'এই কি বাংলার সংস্কৃতি, যেখানে একজন সাংসদ প্রকাশ্যে তফসিলি জাতির সাংসদ, যিনি কিনা নীতি কমিটির চেয়ারম্যানও, তাঁকে নির্লজ্জ এবং উপহাসাম্পদ বলে কটাক্ষ করছেন? মনে রাখবেন, অম্বেডকরজি ভারতকে সংবিধান দিয়েছিলেন, দুর্নীতিগ্রস্তদের হাত থেকে তাকে রক্ষা করবেন সোনকরজি'।


সেখানেই থামেননি নিশিকান্ত। তাঁর বক্তব্য, 'অভিযুক্ত সাংসদ মহুয়ার শিক্ষার বহর দেখুন, মনে হয় ভুল হিসেব নিকেশের জন্য ব্যাঙ্কের চাকরি গিয়েছিল। গতকাল সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, ১৩ হাজার কোটির কয়লা কেলেঙ্কারি হয়েছে। আজ লিখছেন ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকার দুর্নীতি। সত্যিই ভয় পেয়েছেন'?



গোটা বিতর্কে তৃণমূলের তরফে অনেকেই ইতিমধ্যে মহুয়ার সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন। অন্য বিরোধী দলের প্রতিনিধিরাও মহুয়ার সমর্থনে মুখ খুলেছেন। এ প্রসঙ্গে সিপিএম-এর রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, "মহুয়া আর বেশি দিন তৃণমূলে নেই। গাছ থেকে ফল পড়ে যাবে, না পেড়ে নেবে জানা নেই। আদানি নিয়ে বলতে গেলে মোদির ভাইপো এবং দিদির ভাইপো, দু'জনেরই অসুবিধা রয়েছে।"


এই আবহেই, আগামী ৭ নভেম্বর ফের নীতি কমিটির বৈঠক বসছে। সেদিন গোটা ঘটনাক্রমের খসড়া রিপোর্ট তৈরি করা হবে, যা লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছে জমা দেওয়া হবে।