নয়াদিল্লি: আমিষ খাবার নিষিদ্ধ করার পক্ষে সওয়াল তৃণমূল সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহার। তাঁর মতে, শুধু গোমাংস নয়, সমস্ত আমিষ খাবার নিষিদ্ধ করার পক্ষে তিনি। সংসদের বাইরে সাংবাদিকদের মুখোমুখই হয়ে এমন মন্তব্য করলেন শত্রুঘ্ন। শুধু তাই নয়, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালুর পক্ষেও সওয়াল করলেন। (Shatrughan Singh)


বিজেপি শাসিত উত্তরাখণ্ডে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু হওয়া নিয়ে প্রশ্নের জবাবে মুখ খোলেন শত্রুঘ্ন। সেখানে তিনি বলেন, “উত্তরাখণ্ডে যা হয়েছে, তা প্রশংসনীয়। অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু হওয়া উচিত। কিন্তু এর মধ্যে অনেক সূক্ষ্ম বিষয় রয়েছে। বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মূল্যবোধ জড়িয়ে রয়েছে। হঠাৎ করে একদিন, নির্বাচনের আগে চালু করে দিলেই হল না।” অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে সর্বদল বৈঠক হওয়া উচিত, সকলের পরামর্শ নেওয়া উচিত বলে মত তাঁর। (TMC News)


শত্রুঘ্ন আরও বলেন, “অনেক জায়গায় গোমাংস নিষিদ্ধ করেছেন আপনারা (বিজেপি)। সঠিক সিদ্ধান্ত। আমার মতে, গোমাংস কেন আমিষ খাবারই নিষিদ্ধ হওয়া উচিত। কিন্তু কোথাও গোমাংস নিষিদ্ধ, কোথাও নয়। উত্তর-পূর্বে কী হয়েছে! আমার এক বন্ধু বেশ ভাল বলেছেন, ওখানে খেলে ‘ইয়াম্মি’, আর অন্য কোথাও খেলে ‘মাম্মি’? এমন তো চলবে না। নিষিদ্ধ করতে হলে সর্বত্র করা হোক।”



দিল্লির বিজেপি নেতৃত্ব যখনই বাঙালির মাছ-মাংস খাওয়া নিয়ে কথা বলেছেন, এরাজ্যের তৃণমূল নেতৃত্ব তার তীব্র প্রতিবাদ করেছেন। চৈত্র নবরাত্রির সময় মাছ-মাংস খাওয়া মানুষদের যখন মুঘলদের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, সেই সময় মাছে-ভাতে থাকা বাঙালির হয়ে মাঠে নেমেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খোদ জানিয়েছিলেন, মানুষের খাদ্যাভ্য়াসে হস্তক্ষেপ করার বিরোধী তিনি। কে কী খাবেন, না খাবেন, তা যাঁর যাঁর নিজস্ব ব্যাপার। কিন্তু এবার তাঁদের দলের সাংসদ শত্রুঘ্নই আমিষ নিষিদ্ধ করার পক্ষে সওয়াল করলেন। তাই তাঁর মন্তব্যে বিতর্ক শুরু হয়েছে। যদিও তৃণমূল নেতৃত্ব এখনও পর্যন্ত এ নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি।


রাজনীতিতে শত্রুঘ্নর হাতেখড়ি বিজেপি-র হাত ধরেই। কেন্দ্রে বিজেপি সরকারের মন্ত্রীও ছিলেন তিনি। বিজেপি-তে লালকৃষ্ণ আডবানি-পন্থী হিসেবেই পরিচিত ছিলেন শত্রুঘ্ন। নরেন্দ্র মোদি এবং অমিত শাহের বিরুদ্ধে বেশ কয়েক বার মুখও খোলেন। ২০১৯ সালে বিজেপি ছেড়ে বেরিয়ে আসেন তিনি। এর পর অল্প সময় কংগ্রেসের থাকার পর, ২০২২ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূলে যোগ দেন শত্রুঘ্ন। সেই থেকে আসানসোলে তৃণমূলের সাংসদ তিনি। তাই শত্রুঘ্ন  আমিষ নিষিদ্ধের পক্ষে সওয়াল করায় প্রশ্ন উঠছে।