রাজীব চৌধুরী, মুর্শিদাবাদ: রাতে গ্রেফতার, দুপুরে জামিন! গ্রেফতার হতে সময় লাগল ৭২ ঘণ্টা! জামিন মিলল ১৮ ঘণ্টাতেই! মুর্শিদাবাদের কান্দিতে বিএসএফ জওয়ানকে গণপিটুনির অভিযোগে সোমবার রাতে গ্রেফতার হন পঞ্চায়েত সদস্য সহ ২ তৃণমূল কর্মী।
সোমবার এবিপি আনন্দে খবর দেখানোর পরই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। কিন্তু মঙ্গলবার কান্দি কোর্টে তোলা হলে দুজনেরই জামিন মঞ্জুর করেন বিচারক।
প্রশ্ন উঠছে কান্দি থানা থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে, হামলার ঘটনার ছবি সিসিটিভিতে ধরা পড়লেও গ্রেফতার করতে কেন এত দেরি? শুধুমাত্র শাসকদলের কর্মী হওয়াতেই কি কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই জামিনে ছাড়? ছবিতে মারধরের সময় এতজন দেখা গেলেও গ্রেফতার কেন মাত্র দুজন?
ঘটনায় ক্ষুব্ধ আক্রান্ত জওয়ানের দাদা রাজেশ সাহানি বলেন, শাসক দলের লোক হওয়ার জন্য ছাড়, কেন দুজন গ্রেফতার?, অন্যান্যদের গ্রেফতার, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি।
এবার জামিন ঘিরেও শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, মিডিয়ার চাপে গ্রেফতার করতে বাধ্য হল, কিন্তু সবই জামিনযোগ্য ধারায় মামলা। ছাড়া পেয়ে যাবে। আমি মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছি, তিনি কিছু না করলে প্রধানমন্ত্রীকে জানাব, দরকারে হাইকোর্টে যাব।
বিজেপির মুর্শিদাবাদ দক্ষিণের জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর ঘোষ বলেন, এখানে গনপিটুনি হয়েছে তো, শুধু দুজন তো ছিল না, আরও লোক ছিল, তারা কোথায়, তাদের কেন পুলিশ গ্রেফতার করছে না?


জামিনের বিষয়ে মুখে কুলুপ আঁটলেও ঘটনার নিন্দা করেছে তৃণমূলও। দলের মুর্শিদাবাদ জেলা সাধারণ সম্পাদক গুরুপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বলেন, এই ঘটনা নিন্দাজনক, বেনোজল কেউ এই ঘটাল কিনা ভেবে দেখা উচিত। জামিন প্রসঙ্গে মুখ খুলতে চাননি তিনি।
শুক্রবার মুর্শিদাবাদের কান্দিতে তৃণমূলের ‘বঙ্গধ্বনি’ কর্মসূচির মিছিলে ঢুকে পড়ায় এক বিএসএফ জওয়ানকে গণপিটুনির ছবি সামনে আসে। হাতে ও মাথায় গুরুতর চোট পান বিশ্বজিত্‍ সাহানি নামে ৩২ বছরের এই জওয়ান। অপরাধ করেও আর কতদিন শুধুমাত্র ক্ষমতার জোরে ছাড় পেয়ে যাবেন দুষ্কৃতীরা, প্রশ্ন সব মহলে।