কলকাতা : বাংলাদেশে ইউনূস সরকারের জমানায় হিন্দুদের ওপর নেমে এসেছে অকথ্য় অত্য়াচারের খাঁড়া। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্য়াশনাল বাংলাদেশের রিপোর্ট অনুযায়ী, সরকার পতনের পর মাত্র ৩ দিনেই হিন্দুদের ওপর আক্রমণের ২০৫টি ঘটনা ঘটে যায়। যাতে ৫ জন হিন্দুর মৃত্য়ু হয়। ইউনূস সরকারের ১০০ দিনে বাংলাদেশের অন্তত ২২টি জায়গায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে বলেও রিপোর্টে জানিয়েছে তারা। 


নৈরাজ্য়ের আগুনে জ্বলছে বাংলাদেশ। ৩ মাসের বেশি সময় ধরে অত্য়াচার চালানো হচ্ছে, হিন্দুদের ওপর। ঘর-বাড়ি-দোকান এবং ধর্মীয় স্থানগুলিকে নিশানা করছে কট্টরপন্থীরা। টার্গেট করে মারধর করা হচ্ছে তরুণদের। তারপর সেই হিন্দুদেরই আবার নির্বিচারে টেনে হিঁচড়ে গ্রেফতার করছে পুলিশ।


২০০৬ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছিলেন মহম্মদ ইউনূস। তিনি বাংলাদেশের দায়িত্ব নেওয়ার পরই সেখানে অশান্তির আগুন জ্বলতে শুরু করেছে। ইউনূস ক্ষমতায় আসার পর ১০০ দিনে, বাংলাদেশে হিন্দুদের কী দুর্দিন নেমে এসেছে, তা নিয়ে চাঞ্চল্য়কর তথ্য় উঠে এসেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্য়াশনাল বাংলাদেশের রিপোর্টেও!


৫ অগাস্ট বাংলাদেশ ছেড়েছিলেন শেখ হাসিনা। আর ৮ অগাস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে শপথ নেন মহম্মদ ইউনূস। ঐক্য় পরিষদ নামে বাংলাদেশের একটি সংগঠনকে উদ্ধৃত করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্য়াশনাল বাংলাদেশের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ৫ অগাস্ট থেকে ২০ অগাস্টের মধ্য়ে, মাত্র ১৫ দিনে ২ হাজার ১০টি হিংসার ঘটনা ঘটে। যার জেরে ৯ জন হিন্দুর মৃত্য়ু হয়। সরকার পতনের পর মাত্র ৩ দিনেই হিন্দুদের ওপর আক্রমণের ২০৫টি ঘটনা ঘটে যায়। যাতে ৫ জন হিন্দুর মৃত্য়ু হয়।

অগাস্টে ইউনূস সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর, বাংলাদেশে বিভিন্ন জায়গায় দুর্গাপুজো করতে গিয়ে বাধার মুখে পড়েন হিন্দুরা। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্য়াশনাল বাংলাদেশের রিপোর্টও বলছে, ইউনূস সরকারের ১০০ দিনে বাংলাদেশের অন্তত ২২টি জায়গায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে। একাধিক আর্ট অ্য়াকাডেমিতে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং শিল্প প্রদর্শনী নিষিদ্ধ করা হয়েছে।


বাংলাদেশ হিন্দু বুদ্ধিস্ট খ্রিস্টান ইউনিটি কাউন্সিল এবং বাংলাদেশ পুজো উদযাপন পরিষদের তরফে হিন্দুদের ওপর হওয়া অত্য়াচারের সমস্ত তথ্য় ইউনূস সরকারকে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, তারপরও হিন্দুদের ওপর অত্য়াচার কমা দূরের কথা, আরও বেড়েছে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্য়াশনাল বাংলাদেশের রিপোর্টেও বলা হয়েছে, হিন্দুদের ওপর হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত শনাক্ত করার ক্ষেত্রে এবং সেসব ঘটনার তদন্তের ক্ষেত্রে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা চোখে পড়ার মতো।

যদিও, পরিস্থিতি এরকম ভয়ঙ্কর হওয়া সত্ত্বেও মহম্মদ ইউনূস দাবি করেন, 'কিছু ক্ষেত্রে তারা (হিন্দু) হিংসার সম্মুখীনও হয়েছেন। এ নিয়ে যা কিছু প্রচার করা হয়েছে তা সমপূর্ণ অতিরঞ্জিত। হিংসার ছোট ছোট ঘটনাগুলো ছিল মূলত রাজনৈতিক।'

একসময়ে অত্য়াচার থেকে রক্ষা পেতেই পাকিস্তান ভেঙে তৈরি হয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু, আজ সেই বাংলাদেশেই অত্য়াচারের শিকার হিন্দুরা। আবার জ্বলছে নৈরাজ্য়ের আগুন।