ঢাকা : 'আইনজীবী সইফুল ইসলাম হত্যার সঙ্গে সনাতনী কেউ জড়িত নয়।' প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে একথা জানিয়ে দিল বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট। পাশাপাশি তাদের অভিযোগ, একটি গোষ্ঠী পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে সনাতনীদের উপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করছে।


প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তারা আরও জানায়, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্রকে ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রাম আদালতে নিয়ে আসা হয়। আদালতে তাঁকে মিথ্যা কথায় রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। আদালত চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়। পরে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর মুক্তি চেয়ে সাধারণ সনাতনীরা আদালত চত্বরে বিক্ষোভ দেখান। হাজার হাজার সনাতনীরা প্রিজিন ভ্যানের সামনে শুয়ে পড়ে প্রতিবাদ করেন। সেই সময় বিনা উস্কানিতে পুলিশ, আর্মড পুলিশ ও সেনাবাহিনী, বিজিবি সনাতনীদের ওপর হামলা করে। গুলি বর্ষণ ও গ্রেনেড নিক্ষেপের মতো ঘটনা পর্যন্ত তারা ঘটায়। এসময় সনাতনীরা এদিক ওদিক ছড়িয়ে পড়েন এবং নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে দৌড়ঝাঁপ করেন। 


এই সময়ে কিছু নির্দিষ্ট স্লোগান তুলে  কিছু সাধারণ মানুষের সনাতনীদের উপর হামলা চালানো হয় এবং ইট-পাথর নিক্ষেপ করা হয় বলে অভিযোগ তুলেছে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট। সেই স্লোগান দিয়েই চট্টগ্রামের আইনজীবী সইফুল ইসলাম আলিফের উপর হামলা চালানো হয় বলেও তাদের অভিযোগ। এই ঘটনার তারা তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।


বাংলাদেশের নিরাপত্তাবাহিনী ও হিন্দু নেতা চিন্ময় কৃষ্ণদাস ব্রহ্মচারীর সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনার আবহে গতকাল প্রাণ যায় এক আইনজীবীর। রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় কৃষ্ণদাসকে এদিন বাংলাদেশের আদালত জামিন মঞ্জুর করেনি। আদালত চত্বরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে কর্তব্যরত এক পুলিশ ইন্সপেক্টর নুরুল ইসলামকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা এএফপি জানায়, সংঘর্ষের সময় জখম হন পাবলিক প্রসিকিউটর সইফুল ইসলাম আলিফ। "তাঁর মাথায় গুরুতর চোট ছিল।" একই কথা জানিয়েছেন হাসপাতালের অধিকর্তা তসলিম উদ্দিন। বাংলাদেশের 'প্রথম আলো' সংবাদপত্র সূত্রেও খবর, ঘটনায় এক আইনজীবীর মৃত্যু হয়েছে।


প্রসঙ্গত, শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশজুড়ে সংখ্যালঘুদের উপর হামলার বিভিন্ন ঘটনা সামনে আসতে শুরু করে। এরই মধ্যেই সোমবার ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গ্রেফতার করা হয় ইসকনের সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে। চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে তাঁকে গ্রেফতার করে ঢাকা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলার দায়ের করা হয়েছে।