নয়াদিল্লি: সুপ্রিম কোর্ট তিন তালাক নিষিদ্ধ করেছে বছর তিনেক আগে। গত বছর সংসদে পাশ হয়েছে তিন তালাক বিরোধী আইন। কিন্তু আইন-আদালত করেও তিন তালাক নিষিদ্ধ করা যায়নি। ২৭ বছরের গুলনাজ তার জাজ্জ্বল্য উদাহরণ। তিনদিন ঘরে বন্ধ করে রেখে মারধরের পর গুলনাজের বাবা-মায়ের সামনে তিন তালাক বলে স্ত্রীকে ডিভোর্স দিয়েছেন স্বামী। এমনই অভিযোগ। ঘটনাটি ঘটেছে দিল্লির গোকুলপুরীতে।
বছর চারেক আগে গুলনাজের বিয়ে হয়। কিন্তু সা়ড়ে চার বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও সন্তানের জন্ম দিতে পারেননি গুলনাজ। এই অপরাগতার মাশুল দিতে হয় তাঁকে। শুরু হয় মারধর। এমনকি শাস্তি হিসাবা তাঁর বাপের বাড়ি থেকে পণও দাবি করেন স্বামী। সাড়ে চার বছর ধরে মারধর, মানসিক নির্যাতনের শিকার হলেও মুখ বুজে সহ্য করেছেন গুলনাজ। এবার অত্যাচার চরমে ওঠে। তিনদিন ধরে ঘরবন্দি করে রেখে লাগাতার তাঁর স্বামী মারধর করেন বলে অভিযোগ। কোনওমতে মা-বাবাকে ফোন করে গোটা ঘটনার কথা জানান গুলনাজ। খবর পাওয়া মাত্রই তড়িঘড়ি মেয়ের কাছে পৌঁছন গুলনাজের বাবা-মা। তাঁদের সামনেই তিন তালাক দিয়ে স্ত্রীয়ের সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটান স্বামী।
ঘটনার ঘোর এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেননি নির্যাতিতা। দীর্ঘদিন ধরে যেভাবে তিনি শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, তা কিছুতেই ভুলতে পারছেন না। বিয়ের পর থেকে কী কী ভাবে তিনি অত্যাচারের শিকার হয়ে এসেছেন তার সবটাই জানিয়েছেন সাংবাদিকদের ।স্বামীর কথা মতো না চললেই তাঁকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হতো বলেও জানিয়েছেন গুলনাজ। গুলনাজ জানিয়েছেন, তিনি তাঁর স্বামী বা শ্বশুর বাড়ি থেকে কিছু চান না। শুধু চান তাঁর স্বামী শাস্তি পান। তিনি যেন বিচার পান। পুলিশ গুলনাজের স্বামীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে। ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তবে গুলনাজের স্বামী এখনও পলাতক। গুলনাজের বাবা-মায়ের অভিযোগ পুলিশ এফআইআর নিতে দেরি করেছে। পুলিশের আরও তৎপর হওয়া উচিত ছিল।