ট্রাম্প প্রশাসনের সব সিদ্ধান্তের কাছে মাথা না নোওয়ানোর খেসারত । আগে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল বড় অঙ্কের  অনুদান। আর এবার সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ভর্তির অধিকারের উপর কোপ বসাল আমেরিকার সরকার। নতুন নির্দেশ জারি করে হোয়াইট হাউস জানিয়ে দিল, এখন থেকে আর বিদেশি পড়ুয়া ভর্তি করতে পারবে না মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভিজাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ভর্তির করার ক্ষমতা খর্ব করা হল। 

বৃহস্পতিবার সরকারের তরফে বলা হয়েছে, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের তদন্তের ফলেই এই নির্দেশ। হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি ক্রিস্টি নোয়েম বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি চিঠি পাঠিয়ে এ কথা জানান। তিনি একটি X পোস্টে এর কারণ ব্যাখ্যা করেন। হাভার্ডের বিরুদ্ধে  হিংসার প্রশ্রয় দেওয়ার মতো অভিযোগ করেছেন তিনি। তাছাড়া ইহুদি-বিদ্বেষ, ইহুদিদের বিরুদ্ধে ভেদাভেদ তৈরি করার মতো অভিযোগ তোলা হয়েছে। এছাড়াও অভিযোগ,  চিনের কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে হাত মিলিয়ে চলছে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়। তাই এই  বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে এই কড়া পদক্ষেপ করা হচ্ছে। তাছাড়া মার্কিন প্রশাসন স্পষ্ট করে দিয়েছে  বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশী শিক্ষার্থীদের ভর্তি করা একটি “বিশেষাধিকার, অধিকার নয়”। প্রসিদ্ধ এই বিশ্ব বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার খরচ বিশাল। এই প্রসঙ্গেই ট্রাম্প প্রশাসনের ব্যাখ্যা, নিজেদের বহু বিলিয়ন ডলারের সম্পদের সঞ্চয় বৃদ্ধির জন্য বিদেশী শিক্ষার্থীদের শুষে নেওয়া হচ্ছে। বিদেশী শিক্ষার্থীদের থেকে অনেক বেশি টিউশন ফি আদায় করে হার্ভার্ড। 

তবে হ্যাঁ, যদি হাভার্ড চায় এই বিশেষাধিকার ফেরত পেতে, আবার বিদেশি পড়ুয়া ভর্তি করতে, স্টুডেন্টস এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম করাতে,তাহলে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তাদের "প্রয়োজনীয় তথ্য" দিতে হবে। হোয়াইট হাউসের এই সিদ্ধান্তে বিরাট সমস্যায় পড়তে চলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু বিদেশী পড়ুয়া। তাঁদের অন্যত্র পড়াশোনার ব্যবস্থা করতে হবে, নইলে তারা আইনি মর্যাদা হারাবে। জানিয়েছে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ।

বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে, সরকারের এই পদক্ষেপ বেআইনি। অধুনা বিশ্বের ১৪০টি দেশ থেকে মেধাবী পড়ুয়ারা হার্ভার্ডে পড়তে আসে। তাদের বিদ্যাদান করতে হার্ভার্ড প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট অনুসারে, প্রতি বছর ৫০০-৮০০ জন ভারতীয় শিক্ষার্থী এবং বিদ্বান মানুষ হার্ভার্ডে পড়াশোনা করেন। বর্তমানে, ভারত থেকে ৭৮৮ জন শিক্ষার্থী হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন।

গত এপ্রিল মাসে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প  বলেছিলেন, "হার্ভার্ডকে আর শিক্ষার জন্য উপযুক্ত জায়গা হিসেবে বিবেচনা করা যাবে না, এবং বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজের কোনও তালিকায়ও এটিকে বিবেচনা করা উচিত নয়" ।