ইস্তানবুল: যেন মৃত্যু উপত্য়কা! ভূকম্পবিধ্বস্ত (Turkey Syria Earthquake) তুরস্ক ও সিরিয়ায় যে ভাবে হুড়মুড়িয়ে মৃতের সংখ্য়া (death toll) বেড়ে চলেছে, তার পর ঘুরেফিরে এই 'মৃত্য়ু উপত্যকা' শব্দবন্ধটিই বার বার ব্যবহৃত সংবাধমাধ্যমে। রবিবার দুপুর পর্যন্ত যা হিসেব, তাতে মৃতের সংখ্যা ২৯ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। এর মধ্যে তুরস্কে প্রাণ গিয়েছে ২৪ হাজার ৬১৭ জনের, সিরিয়ায় সংখ্যাটি সাড়ে চার হাজার।
আশঙ্কার পূর্বাভাস...
রাষ্ট্রপুঞ্জে ত্রাণ সংক্রান্ত বিভাগের প্রধান মার্টিন গ্রিফিথসের কথায় আশঙ্কার নতুন সুর শুনতে পেয়েছে ভূমিকম্প বিধ্বস্ত তুরস্ক ও সিরিয়া। তিনি বলেন, 'মৃতের সংখ্য়া কোথায় পৌঁছবে তা এই মুহূর্তে নির্দিষ্ট ভাবে বলা কঠিন। কারণ সে জন্য ধ্বংসস্তূপের নিচ পর্যন্ত যাওয়া দরকার। তবে আমার ধারণা, সংখ্যাটি দ্বিগুণ বা তার বেশিও হতে পারে।' রাষ্ট্রপুঞ্জ আগেই জানিয়েছে, তুরস্ক ও সিরিয়া মিলিয়ে ৮ লক্ষ ৭০ হাজারেরও বেশি মানুষের গরম খাবার দরকার। স্রেফ সিরিয়াতেই অন্তত ৫৩ লক্ষ মানুষ গৃহহীন। এর উপর মৃতের সংখ্যা যদি বর্তমানের থেকে দ্বিগুণেরও বেশি হয়, তা হলে বিপর্যয়ের ছবিটা কী দাঁড়াবে ভেবেই শিউরে উঠছে বিশ্বের নানা প্রান্ত।
সাহায্যের হাত...
এদিন সিরিয়ার ভূকম্পবিধ্বস্ত এলাকার দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে কাতার। এগিয়ে এসেছে জার্মানিও। যদি তুরস্ক ও সিরিয়ার ভূকম্পবিধ্বস্ত বাসিন্দাদের কোনও আত্মীয় জার্মানিতে থাকেন, তাহলে সাময়িক ভাবে সেখানে থাকতে পারবেন তাঁরাও--এমনই ভিসার ব্যবস্থা করেছে জার্মানি। পিছিয়ে ছিল না চিন। তুরস্কে ৫৩ টন তাঁবু পাঠিয়েছে বেজিং। রবিবারই সেগুলি পৌঁছনোর কথা। এর আগে ৪০ হাজার কম্বলও পাঠায় চিন। কিন্তু হঠাৎ এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে যাঁরা সব হারালেন তাঁরা অবশ্য় কোনও কিছুতেই সান্ত্বনা পাচ্ছেন না। প্রিয়জন হারানোর শোক আর একরাশ আতঙ্ক, সব নিয়েই বেঁচে থাকা তাঁদের।
বেঁচে ফেরা...
এসবের মধ্যেই মিরাকল! এ যেন সত্যিই ম্যাজিক। তুরস্কে ধ্বংসস্তূপ থেকে ১২৮ ঘণ্টা পর উদ্ধার করা হয়েছে এক দুধের শিশুকে। জীবিত রয়েছে সে। গত সোমবার ভয়াবহ ভূকম্পে কেঁপে উঠেছিল তুরস্ক। রিখটার স্কেলে কম্পনের তীব্রতা ছিল ৭.৮। এরপর হয়েছে বেশ কিছু আফটার শক। ইতিমধ্যেই প্রায় ২৮ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ভেঙে পড়েছে ৬ হাজারের কাছাকাছি ঘরবাড়ি। কার্যত বিধ্বস্ত অবস্থা তুরস্কে। তার মধ্যেই আশ্চর্যজনক ভাবে উদ্ধার হয়ে এই শিশু। জানা গিয়েছে, শিশুটির বয়স মাত্র ২ মাস। তুরস্কের হাতায় প্রদেশে একটি ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে গিয়েছিল এই বাচ্চাটি। ভূমিকম্প হওয়ার ১২৮ ঘণ্টা পর এই শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী, জেড প্লাস ক্যাটেগরির নিরাপত্তা পেলেন অমর্ত্য সেন