রুমা পাল, এবিপি আনন্দ :  তুরস্ক ও সিরিয়ায় ( Turkey-Syria earthquake  ) ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা সাত হাজার পেরিয়ে গেল! এখনও ধ্বংসাবশেষের নিচে আটকে বহু মানুষ! প্রবল তুষারপাত ও কুয়াশার মধ্যেই চলছে উদ্ধারকাজ। এরকম বিপর্যয় নেমে এলে কী হবে কলকাতায় ( Kolkata ) ? আদৌ কি ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা গুলোর মধ্যে পড়ে কলকাতা? কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?


প্রবল তুষারপাত ও কুয়াশার মধ্যে যানপ্রাণ দিয়ে মানুষকে বাঁচানোর লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন উদ্ধারকারীরা। প্রকৃতির ভয়ঙ্কর এই রূপ দেখে বুক কেঁপে উঠেছে কলকাতাবাসীরও।

কলকাতা নিয়ে দুশ্চিন্তা 
কারণ ২০১৫ সালের এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে পুরভোটের দিন কেঁপে উঠেছিল কলকাতার মাটিও। সেবার কম্পনের উৎসস্থল ছিল নেপাল। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ৭.৮। একাধিক বাড়িতে ফাটল ধরেছিল কলকাতায়! তুরস্কের এই ছবি মনে করিয়ে দিয়েছে সেই ঘটনাকে! সঙ্গে উদ্বেগ, কলকাতায় এই মাপের প্রবল ভূমিকম্প হবে না তো!
তেমনটা হলে কী অবস্থা হবে তিলোত্তমার?

বিশেষজ্ঞদের মতে, ভূমিকম্পপ্রবণ ও মৃদু ভূমিকম্পপ্রবণ জোনের মধ্যেই পড়ে কলকাতা। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের চিফ ইঞ্জিনিয়ার, ভাস্কর সেনগুপ্ত বলেন, কলকাতার সল্টলেক ও নিউটাউন এলাকা নিয়ে দুশ্চিন্তার কারণ রয়েছে। রিখটার স্কেলে ৬ এর আশেপাশে ধাক্কটা এলে, ক্ষতি হয়ে যেতে পারে বড়সড়। 

ভবিষ্যতে বিপদ রোখা যাবে না


শুধু কলকাতাই কেন, অনেকে বলছেন, হালফিলের জোশীমঠের ছবিও তো কম আতঙ্কের নয় ! বিশেষজ্ঞদের মতে, তুরস্ক-সিরিয়ার মতো এত প্রবল মানের ভূমিকম্প কলকাতায় হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকলেও, এর থেকে শিক্ষা নেওয়ার সময় এসেছে। নিয়ম মেনে নগরায়ন, মাটির ধারণক্ষমতা-সহ একাধিক বিষয়ের ওপর জোর না দিলে ভবিষ্যতে বিপদ রোখা যাবে না।

অধ্যাপক পার্থপ্রতিম বিশ্বাস ( কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ) জানাচ্ছেন, 'অতি উচ্চমানের কম্পন। শিক্ষা নিতে হবে। ওখানে যে নগরায়নটা গড়ে উঠেছিল, সেটা ঠিক নয়। মাটির ধারণ ক্ষমতা কমে গেছে। যেমন জোশীমঠ, দার্জিলিং, সিকিম। কলকাতায় ঝুঁকি রয়েছে। রাজারহাট, বেহালা, নিউটাউনে যে নগরায়ন হয়েছে, সেটা ঝুঁকিপূর্ণ। পার্কস্ট্রিটেও কিছু অংশ আছে। স্ট্রাকচারগুলিকে সুনিয়ন্ত্রিত করতে হবে। রেট্রোফিট করতে হবে।' 

বিপর্যয় মোকাবিলা বিশেষজ্ঞ গুপীনাথ ভাণ্ডারি জানাচ্ছেন,  ' পঞ্চায়েত এলাকায় জি প্লাস থ্রি হলেই পরীক্ষা হচ্ছে। মাইক্রোজোনেশন হচ্ছে। জোন ফোর ধরে এখন ডিজাইন হচ্ছে। ' 

তুরস্ক, সিরিয়ায় ভয়ঙ্কর এই বিপর্যয়ে ইতিমধ্যেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে ভারত। ইতিমধ্যে ত্রাণসামগ্রী আর ওষুধ নিয়ে তুরস্কে পৌঁছে গেছে NDRF-এর দুটি টিম। চারিদিকে হাহাকার আর স্বজন হারানোর কান্নায় যখন তুরস্কের বাতাস ভারি করে তুলেছে, তখন দমকা হাওয়ার মতো স্বস্তি এনে দিয়েছে এই ছবিগুলো। কখনও ধ্বংসস্তূপ থেকে প্রাণে বাঁচানো গেছে এক শিশুকে। আরও প্রাণের সন্ধানে খোঁজ চলছে।