নয়াদিল্লি: টাইফুন 'ইয়াগি'র দাপটে বিধ্বস্ত পড়শি দেশ মায়ানমার। বানভাসি দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। ধস নেমেছে জায়গায় জায়গায়। এখনও পর্যন্ত কমপক্ষে ৭৪ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। নিখোঁজ রয়েছেন ৯০ জন। উদ্ধারকার্য শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশের সরকারি টিভি চ্যানেল। বিপর্যয়ের জেরে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকার সঙ্গে। তাই হতাহতের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। (Typhoon Yagi)


মায়ানমারের সেনা শাসিত সরকার শুক্রবার ৩৩ জনের মৃত্যুর কথা জানায়। অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টার মধ্য়ে হতাহতের সংখ্য়া বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। টাইফুন 'ইয়াগি' ক্রমশ বিধ্বংসী আকার ধারণ করেছে। ইতিমধ্যেই তার প্রকোপে ভিয়েতনাম, তাইল্যান্ড, লাওসে ২৬০ জনের বেশি মারা গিয়েছেন। প্রচুর ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছে সর্বত্র। (Myanmar Floods)


লাগাতার ভারী বৃষ্টিতে বহু শহর, গ্রাম জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। ঘরছাড়া হয়ে পড়েছেন প্রায় ২ লক্ষ ৪০ হাজার মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে, সেনা পরিষদের প্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন ওং লেইং বিদেশ থেকে ত্রাণ এবং অর্থসাহায্য চেয়ে আবেদন জানিয়েছেন। রাষ্ট্রপুঞ্জের শরণার্থী সংস্থা জানিয়েছে, এমনিতেই যুদ্ধবিধ্বস্ত মায়ানমারে গৃহহীন মানুষের সংখ্যা ৩৪ লক্ষ। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ফলে সেই সংখ্য়া আরও বাড়ছে।



এখনও পর্যন্ত যা খবর মিলেছে, সেই অনুযায়ী, মায়ানমারের নীচু সমতলভূমি জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। দেশের মধ্যভাগের মান্দালয়, বাগো, পূর্বের শান প্রদেশ এবং দেশের রাজধানী নেপিদ বুধবার থেকে জলমগ্ন হয়ে রয়েছে। সেনা পরিষদের প্রধান এবং অন্য সেনা আধিকারিকরা বানভাসি এলাকা পরিদর্শনে যান। ত্রাণসামগ্রী এবং পুনর্বাসন নিয়ে শুক্রবার বৈঠকও করেন তাঁরা। 


মোট ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি  যদিও, তবে মায়ানমারে হতাহতের সংখ্যা বাড়তে পারে।  বহু মানুষ নিখোঁজ বলে জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম। ২০২১ সাল থেকে মায়ানমারে গৃহযুদ্ধ চলছে। পাশাপাশি, প্রতিবছরই বর্ষা সেখানে সবকিছু ভাসিয়ে নিয়ে যায়। ২০০৮ সালে সেখানে সাইক্লোন 'নার্গিসে'র দাপটে ১ লক্ষ ৩৮ হাজার মানুষ মারা যান। 


টাইফুনের তাণ্ডবে এখনও পর্যন্ত দেশের মধ্য এবং পূর্বভাগে ২৪টি সেতু, ৩৭৫টি স্কুল, একটি বৌদ্ধ মনাস্ট্রি, পাঁচটি বাঁধ, চারটি পগোড়া, ১৪টি ট্রান্সফর্মার, ৪৫৬টি বিদ্যুতের খুঁটি এবং ৬৫ হাজারের বেশি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। রাজধানী নেপিদই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে অনুমান। দেশের প্রাচীন রাজধানী, যা UNSECO হেরিটেজ হিসেবে স্বীকৃত সেখানকার অবস্থাও তথৈবচ। গত ৬০ বছরে এত বৃষ্টি হয়নি বলে জানিয়েছে মায়ানমারের আবহাওয়া দফতর। বহু প্রাচীন মন্দিরও ভেঙে পড়েছে সেখানে।