লখনউ: অল্পবয়সিদের মধ্যে হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে গিয়েছে হঠাৎ করেই। তাই বলে শিশুদের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার খবর শোনা যায় না সচরাচর। কিন্তু উত্তরপ্রদেশে এবার সেই নজিরবিহীন ঘটনাই ঘটল। তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী, ন'বছর বয়সি এক শিশু হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছে সেখানে। স্কুলে খেলছিল শিশুটি। সেই সময়ই সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয় বলে খবর। (Uttar Pradesh News)


উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ের মন্টফোর্ট স্কুলের পড়ুয়া ওই শিশু হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছে। বৃহস্পতিবার স্কুলের মধ্যেই এই ঘটনা ঘটে। শনিবার এই ঘটনায় মুখ খোলেন স্কুলের অধ্যক্ষ। তিনি জানান, মানবী সিংহ নামের মেয়েটি স্কুলের মাঠে অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিল। সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় ফতিমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। (Lucknow School Student)


এর পর মেয়েটির পরিবারকে খবর দেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। তাঁরা ফতিমা হাসপাতাল থেকে মেয়েটিকে নিয়ে চন্দন হাসপাতালে যান। সেখানে চিকিৎসকরা জানান, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছে মেয়েটি। এই ঘটনার কথা পুলিশের কাছেও পৌঁছয়। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে উদ্যত হয় তারা। কিন্তু মেয়েটির পরিবার জানিয়েছে, এ নিয়ে কোনও পদক্ষেপ চায় না তারা। মেয়েটির মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। একরত্তির হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার খবরে স্তম্ভিত অভিভাবক থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকারা। শুক্রবার স্কুলটিতে ছুটি ঘোষণা করা হয়। 


হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শিশুমৃত্যুর কথা সচরাচর শোনা যায় না। চিকিৎসকদের একাংশের মতে, পূর্বলক্ষণ ছাড়া এত কম বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়া সম্ভব নয়। হতে পারে শিশুটির শরীরে অন্য কোনও রোগ বাসা বেঁধেছিল। বিষয়টি খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে মত তাঁদের। হৃদরোগ নিয়ে এমনিতেই ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে অনেক। তাই সবকিছু খতিয়ে না দেখে, কিছু বলা সম্ভব নয় বলে মত তাঁদের। 


চিকিৎসকদের মতে, যদি সত্যিই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে শিশুটি, সেক্ষেত্রে কিছু না কিছু লক্ষণ নিশ্চয়ই ছিল। সেই লক্ষণগুলি জানা প্রয়োজন। এমনকি মায়ের পেটে থাকাকালীনই শিশুটির শরীরে জটিল কোনও রোগ বাসা বেঁধে থাকতে পারে বলে মনে করছেন সঞ্জয় গাঁধী পিজিআই-এর চিকিৎসক সন্তোষ কুমার। একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, কখনও পরীক্ষা হয়নি বলে হয়ত পরিবারও রোগের কথা জানতে পারেননি। মেয়েটির মধ্যে কোনও লক্ষণ ছিল কি না, তা পরিবারের লোকজনেরই জানানো উচিত বলে মত তাঁর।


ওই চিকিৎসক জানিয়েছেন, শিশুদের হাত-পা যদি নীলচে রং ধারণ করে, খেলার সময় যদি ঠোঁট নীল হয়ে যায়, হাত-পা অথবা নখ যদি ফুলে যায়, কান্নার সময় যদি শ্বাসকষ্ট হয়, অজ্ঞান হয়ে যায়, উবু হয়ে বসলে যদি শ্বাসকষ্ট হয়, সেক্ষেত্রে অভিভাবকদের সচেতন হওয়া উচিত এবং সঙ্গে সঙ্গে শিশুর ডাক্তারি পরীক্ষা করান উচিত।