রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ অধিবেশন চলছে। সেখানে বক্তব্য রাখতে ঢুকলেন ইজরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানইয়াহু। আর সেই সময়ই ঘটে গেল নজিরবিহীন ঘটনা। বহু সংখ্যক কূটনীতিক একযোগে বেরিয়ে গেলেন অধিবেশন থেকে। গাজায় ইজরায়েলের সামরিক অভিযানের প্রতিবাদ জানাতেই এই পদক্ষেপ কূটনীতিকদের। একই কারণে বিশ্বজুড়ে অনেকটাই কোণঠাসা ইজরায়েল।

Continues below advertisement

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ উঠেছে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে। তিনি ঘোষণা করেছেন, গাজায় "কাজ শেষ করবে" ইজরায়েল এবং সেটাও করবে "যত তাড়াতাড়ি সম্ভব।" তাঁর ভাষণের আগে, তিনি ইজরায়েলি সেনাবাহিনীকে গাজা উপত্যকার চারপাশে লাউডস্পিকার রাখার নির্দেশ দেন যাতে প্যালেস্তিনীয়দের কাছে তাঁর বক্তব্য সম্প্রচার করা যায়।

অ্যাক্সিওস নিউজ ওয়েবসাইটের প্রতিবেদন অনুসারে, বক্তৃতা চলাকালীন আরব ও মুসলিম দেশগুলির প্রায় সকল প্রতিনিধি ওয়াক-আউট করেন। বেশ কয়েকটি আফ্রিকান দেশ এবং কিছু ইউরোপীয় রাষ্ট্রের প্রতিনিধিও তাতে শামিল হন।

Continues below advertisement

ট্রাম্প প্রশাসন ভিসা না দেওয়ার পর একদিন আগে প্যালেস্তিনীয় প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস সাধারণ অধিবেশনে দূর থেকে ভাষণ দিয়েছেন। আব্বাস প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছেন যে, প্যালেস্তিনীয়রা "তাঁদের সকল কষ্ট সত্ত্বেও" কখনও গাজা ত্যাগ করবেন না। অন্যদিকে নেতানিয়াহুর কথায়, ইজরায়েলি গোয়েন্দারা ভাষণটি সরাসরি সম্প্রচার রুখতে গাজা জুড়ে ফোনও দখল করে নেন। তিনি হামাস নেতাদের আত্মসমর্পণ, অস্ত্র জমা দেওয়া এবং পণবন্দিদের মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানান।

নেতানিয়াহু বলেন, "যাঁরা প্রকাশ্যে আমাদের নিন্দা করেন তাঁদের মধ্যে অনেক নেতাই বন্ধ দরজার আড়ালে ব্যক্তিগতভাবে আমাদের ধন্যবাদ জানান। তাঁরা আমাকে বলেন যে তাঁরা ইজরায়েলের দুর্দান্ত গোয়েন্দা পরিষেবাকে কতটা মূল্য দেন যা তাঁদের রাজধানীতে বারবার জঙ্গি হামলা প্রতিরোধ করেছে।"

পৃথক প্যালেস্তাইন রাষ্ট্রের পক্ষে বরাবরই সমর্থন ছিল। এমনকী আরব দুনিয়ার পর ভারতই প্রথম দেশ, যারা প্যালেস্তিনীয়দের প্রতিনিধি হিসেবে Palestine Liberation Organisation-কে স্বীকৃতি দেয়। কিন্তু আগের সেই অবস্থান থেকে ভারত সরে আসছে কি না, প্রশ্ন উঠছিল গত কয়েক বছর ধরেই। আর সেই আবহেই দিনকয়েক আগে ভারত ফের প্যালেস্তাইনের সমর্থনে এগিয়ে আসে। রাষ্ট্রপুঞ্জের ভোটাভুটিতে দ্বিরাষ্ট্র নীতির পক্ষেই ভোট দেয় ভারত। অর্থাৎ ইজরায়েল এবং প্যালেস্তাইন, দুই পৃথক রাষ্ট্রের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পক্ষে ভোট দেওয়া হয়। (India Votes for Palestine's Statehood)

রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় ‘New York Declaration’ পেশ করা হয়। রাষ্ট্রনেতাদের বৈঠকের আগে, ওই ঘোষণাপত্রটি জমা পড়ে। ইজরায়েল এবং প্যালেস্তাইন, দুই পৃথক রাষ্ট্রের স্বপ্ন বাস্তবায়নের রূপরেখা সাজানো রয়েছে ওই ঘোষণাপত্রে। ওই ঘোষণাপত্রে যে দ্বিরাষ্ট্রের প্রস্তাব রয়েছে, তাতে সমর্থন জানিয়েছে ভারত। শুধুমাত্র ভারতই নয়, ১৪২টি দেশই পৃথক ইজরায়েল ও প্যালেস্তাইন রাষ্ট্রের পক্ষে ভোট দিয়েছে। বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে ১০টি দেশ। ১২টি দেশ ভোটাভুটিতে অংশ নেয়নি।