কলকাতা: কাশ্মীরের বুকে ফের ভয়াবহ জঙ্গি হামলা। জঙ্গিদের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে গেল একের পর এক প্রাণ। জঙ্গি হানায় রক্তাক্ত কাশ্মীরে মৃত্যুমিছিল। পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর হামলার ঘটনায় অন্তত ২৮ জনের মৃত্যুর আশঙ্কা করা হয়েছে। এক আইবি অফিসারও নিহত। নির্দেশ পেয়েই শ্রীনগরে পৌঁছেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেও বৈঠক করেন আমিত শাহ। 


পুলওয়ামার পর কাশ্মীরের বুকে সবথেকে বড় জঙ্গি হামলা। পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের ওপর গুলিবৃষ্টি করে, হত্য়ালীলা চালাল জঙ্গিরা। জঙ্গিরা অন্তত ৫০ রাউন্ড গুলি চালিয়েছে বলে সূত্রের খবর। ইতিমধ্য়ে লস্কর ই তৈবার সহযোগী সংগঠন 'দ্য় রেসিস্ট্য়ান্স ফোর্স' এই জঘন্য় হামলার দায় স্বীকার করেছে। হামলার পরপরই অমিত শাহ তাঁর দিল্লির বাড়িতে একটি বৈঠক ডাকেন। সূত্রের খবর, যেখানে ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো প্রধান তপন ডেকা এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব গোবিন্দ মোহন উপস্থিত ছিলেন। সিআরপিএফ প্রধান জ্ঞানেন্দ্র প্রতাপ সিং, জম্মু ও কাশ্মীরের ডিরেক্টর জেনারেল অব পুলিশ নলিন প্রভাত এবং কিছু সেনা কর্মকর্তাও ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে বৈঠকে যোগ দেন। মিঃ শাহ মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ এবং লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহার সঙ্গেও কথা বলেন। সৌদি আরব থেকেই অমিত শাহের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। নির্দেশ পেয়েই শ্রীনগরে গেলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সব সংস্থার সঙ্গে নিরাপত্তা সংক্রান্ত উচ্চ পর্যায়ের  বৈঠক করেন। 


মিনি সুইজারল্যান্ড বলে পরিতি বৈসরণ উপত্যকায় জঙ্গি নিশানায় পর্যটক। প্রতিবাদে কাশ্মীরেই প্রতিবাদ। কাল জম্মুতে ব্যবসায়ী বন্ধের ডাক দেওয়া হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে এই জঙ্গি হামলা কি একেবারেই অতর্কিত? নিরাপত্তা এজেন্সিগুলো অন্তত তেমনটা ইঙ্গিত করছে না। সূত্রের দাবি, নিরাপত্তা এজেন্সি জানিয়েছে, জঙ্গিরা পর্যটকদের টার্গেট করতে পারে, এমন আশঙ্কা আগে থেকেই ছিল। এমনকী, পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের ওপর হামলা হতে পারে, এমন খবরও ছিল। তারপরও এই জঙ্গি হামলা ঠেকানো গেল না কেন? কেন প্রাণ হারাতে হল পর্যটকদের? উঠছে সেই প্রশ্ন। সূত্রের দাবি, জঙ্গিরা আগেই পহেলগামের এই জায়গার রেকি করেছিল। আন্ডারগ্রাউন্ড সাপোর্টের মাধ্য়মে ওই জায়গায় অস্ত্র এনেছিল জঙ্গিরা। সন্ত্রাসের আবহে পর্যটকদের পহেলগাঁও ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 


মঙ্গলবার পর্যটকদের টার্গেট করে জঙ্গিদের এলোপাথাড়ি গুলিবৃষ্টি এবং তাতে পর্যটকদের মৃত্য়ুর ঘটনা সরকারের দাবিকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে বলে আক্রমণ শানিয়েছে কংগ্রেস। রাহুল গাঁধী সোশাল মিডিয়ায় লিখেছেন, "সরকার জম্মু-কাশ্মীরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক বলে ফাঁপা দাবি না করে, এবার দায় নিয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করুক। যাতে এধরনের বর্বর ঘটনা না ঘটে এবং নির্দোষ ভারতীয়দের প্রাণ না হারাতে হয়।'' কংগ্রেস সাংসদ প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বলেন, "এটা দুর্ভাগ্য়জনক ঘটনা। সরকারের উচিত কড়া ব্য়বস্থা নেওয়া।''