ওয়াশিংটন: আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয়বার ক্ষমতা হাতে পেয়েই লিঙ্গসাম্যের গোড়ায় আঘাত হানার অভিযোগ উঠল ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। সাফ নির্দেশে জানিয়ে দিলেন, আমেরিকায় এখন থেকে শুধুমাত্র দুই লিঙ্গের মানুষই আইনি স্বীকৃতি পাবেন, পুরুষ এবং নারী। অর্থাৎ তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ, সমকামী, রূপান্তরকামীদের আলাদা করে কোনও স্বীকৃতি দেবে না তাঁর সরকার। এই নির্দেশ অপরিবর্তনীয় বলেও ঘোষণা করেছেন ট্রাম্প। (Donald Trump)


সোমবার আমেরিকার ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। আর সূচনা ভাষণেই লিঙ্গসাম্য নিয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দেন। ট্রাম্প বলেন, “আমরা এমন এক সমাজ গঠন করব, যা হবে বর্ণান্ধ, যোগ্যতাই যেখানে শেষ কথা হবে। আজ থেকে আমেরিকার সরকারি নীতি অনুযায়ী, দুই লিঙ্গই আইনি স্বীকৃতি পাবে, পুরুষ এবং নারী।” জাতি ও লিঙ্গের নিরিখে এতদিন যে সমস্ত নীতি চালু ছিল, তা-ও বাতিলের ঘোষণা করেন ট্রাম্প। (Donald Trump Two Gender Policy)


শুধু তাই নয়, এখন থেকে ‘Gender’-এর পরিবর্তে আমেরিকায় লিঙ্গ নির্ধারণে ‘Sex’ শব্দটিই ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছে ট্রাম্প সরকার। জন্মের সময় যে শংসাপত্রে যে লিঙ্গের উল্লেখ থাকবে, আজীবন সমস্ত সরকারি নথিপত্রে, সেই লিঙ্গ পরিচয়ের উল্লেখই থাকবে বলে জানানো হয়েছে। ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। কারণ বাইডেন জমানায় জাতি, বর্ণ, লিঙ্গ নির্বিশেষে সকলের অন্তর্ভুক্তিকরণে যে যে নীতি চালু করা হয়েছিল, সবই বাতিল করতে উদ্যত হয়েছেন ট্রাম্প। রূপান্তরকামীদের অধিকারও কাটছাঁট করার দিকে এগোচ্ছে তাঁর সরকার।


২০২২ সাল থেকে আমেরিকায় তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের নামের পাশে X লেখার নীতি চালু হয়। পুরুষ বা নারীর পরিচয়ে যাঁরা পরিচিত হতে চান না, কোনও গণ্ডির মধ্যে যাঁরা নিজেদের বেঁধে রাখতে চান না, তাঁদের জন্যই তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ হিসেবে, পাসপোর্ট-সহ সরকারি নথিপত্রে X লেখার নিয়ম চালু হয়। কিন্তু আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় বার ইনিংস শুরু করেই সেই সব নীতি বাতিল করলেন ট্রাম্প।


সংগ্রামের মাধ্যমে কষ্টার্জিত তৃতীয় লিঙ্গের পরিচয় হরণের জন্য তাই সমালোচনা শুরু হয়েছে। হিউম্যান রাইটস ক্যাম্পেনের প্রেসিডেন্ট কেলি রবিনসন বলেন, “এভাবে ভয় দেখানো যাবে না আমাদের। আমরা পিছু হটব না। নিজেদের সবটুকু দিয়ে এই ভয়ঙ্কর নীতির বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাব।” একে একে অনেকেই মুখ খুলতে শুরু করেছেন।