Trump Munir Meeting: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে পাকিস্তানের সেনা প্রধান আসিম মুনিরের সাক্ষাতের কথা আগেই শোনা গিয়েছিল। হোয়াইট হাউসে তাঁদের মধ্যাহ্নভোজের পরিকল্পনার কথাও প্রকাশ্যে এসেছিল। এবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানালেন কেন তিনি আহ্বান করেছিলেন পাক সেনাপ্রধানকে। মধ্যাহ্নভোজের সভায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, আসিম মুনিরকে তিনি ধন্যবাদ জানাতে চেয়েছিলেন, কারণ ভারতের সঙ্গে যুদ্ধের ব্যাপারে অগ্রসর হয়নি পাকিস্তান। বরং যুদ্ধ থামিয়েছে। 

এই প্রথম কোনও মার্কিন প্রেসিডেন্ট পাকিস্তানের শক্তিশালী সেনাবাহিনীর প্রধানকে আতিথেয়তার জন্য আহ্বান জানিয়েছিলেন। এই পদক্ষেপ আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা নীতির উপর নিঃসন্দেহে ব্যাপকভাবে প্রভাব বিস্তারকারী হিসেবে বিবেচ্য একটি বিষয়। পাকিস্তানের ঊর্ধ্বতন বেসামরিক কর্মকর্তাদের ছাড়াই হোয়াইট হাউসে আয়োজিত হয়েছিল এই মধ্যাহ্নভোজের আসর। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাতের তীব্রতা রোধে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের ভূমিকার প্রশংসা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তবে শুধু পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির নন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিরও ভূয়সী প্রশংসা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি জানিয়েছেন, 'দু'জন অত্যন্ত বুদ্ধিমান মানুষ যুদ্ধ চালিয়ে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এটা পারমাণবিক যুদ্ধও হতে পারত।' 

গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ের কাছে বৈসারন উপত্যকায় ভয়াবহ জঙ্গি হামলা হয়েছিল। নিহত হন ২৬ জন। তাঁদের মধ্যে ২৫ জন সাধারণ পর্যটক। একজন স্থানীয় টাট্টু ঘোড়ার চালক। পর্যটকদের বাঁচাতে গিয়েই মৃত্যু হয় তাঁর। জঙ্গিরা পর্যটকদের মধ্যে থেকে বেছে বেছে হিন্দু এবং পুরুষদের নিশানা করেছিল। ধর্মীয় পরিচয় জেনে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে খুন করা হয় নিরীহ পর্যটকদের। এই ঘটনার প্রতিবাদে জবাব দেয় ভারত। প্রত্যাঘাত করা হয় ভারতের তরফে। অভিযানের নাম 'অপারেশন সিঁদুর'। জঙ্গিরা যে মা-বোনেদের সিঁথির সিঁদুর মুছে দিয়েছিল, তার সম্মানার্থেই এই অভিযানের এমন অভিনব নাম দেওয়া হয়। জল, স্থল, বায়ু - ভারতের তিন সেনাবাহিনী একযোগে প্রত্যাঘাত করে জবাব দিয়েছিল পাকিস্তানকে। 

পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ৯টি জঙ্গি ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিয়েছিল ভারত। খতম হয় মোস্ট ওয়ান্টেড বেশ কিছু জঙ্গি। সেই তালিকায় রয়েছে মাসুদ আজহারের ভাইও, যে কান্দাহার বিমান অপহরণের অন্যতম মূল চক্রী ছিল। লস্কর-ই-তৈবা, হিজবুল মুজাহিদিন, জইশ-ই-মহম্মদের হেডকোয়ার্টার সমেত একাধিক লঞ্চপ্যাড গুঁড়িয়ে দিয়েছিল ভারতীয় সেনাবাহিনী। এরপর ভারতেও আক্রমণ করে পাকিস্তান। ক্রমশ পরিস্থিতি এত জটিল হতে থাকে যে প্রতি মুহূর্তে দু'দেশের মনে হয়েছিল হয়তো যুদ্ধ হবে। এমনকি যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেও হামলা চালায় পাকিস্তান। তবে এ হেন যুদ্ধ পরিস্থিতিতে শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ বিরতির সিদ্ধান্তে সায় দেয় ভারত এবং পাকিস্তান। প্রথমে অবশ্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছিলেন যে কার্যত তাঁর মধ্যস্থতাতেই এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছিল পাকিস্তান ও ভারত। তবে পরবর্তীতে ভারতের তরফে আমেরিকার এই দাবি কার্যত নস্যাৎ করে দেওয়া হয়।