নয়াদিল্লি: ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে ফের আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচিত ভারত। আমেরিকার বিদেশ মন্ত্রকের তরফে সম্প্রতি Religious Freedom Report 2023 প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে ভারতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, বিশেষ করে মুসলিম এবং খ্রিস্টানদের উপর হিংসাত্মক হামলা, হত্যা, মারধর, ভীতি প্রদর্শন এবং মসজিদ-গির্জার ভাঙচুরের ঘটনা বেড়েছে বলে দাবি করা হয়েছে ওই রিপোর্টে। 


বুধবার US Religious Freedom Report 2023 রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। ওই রিপোর্টে মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা নরেন্দ্র মোদির আমলে ভারতের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সেই নিয়ে মুখ খুলেছেন আমেরিকার বিদেশসচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনও। তাঁর কথায়, “ভারতে লাগাতার ধর্মান্তরণ প্রতিরোধী আইন, ঘৃণা ভাষণ, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়ি, ধর্মস্থানে ভাঙচুরের ঘটনা চোখে পড়েছে।”


ওই রিপোর্টে এমন একাধিক ঘটনার উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে ট্রেনের তিন মুসলমি যাত্রীর উপর রেল নিরাপত্তা কর্মীর গুলি চালানোর ঘটনাও তুলে ধরা হয়েছে। ওই ঘটনায় এখনও তদন্ত চলছে। অভিযুক্ত জেলে রয়েছে। সংখ্যালঘুদের উপর হামলার উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে ওই ঘটনায়। 


২০২১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ওই বছর ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঘটা একাধিক ঘটনার উল্লেখ রয়েছে রিপোর্টে। বলা হয়েছে, ধর্মান্তরণ আইনের দোহাই দিয়ে মুসলিম এবং খ্রিস্টানদের গ্রেফতার করা হয়। যদিও ওই দুই সম্প্রদায়ের মানুষের দাবি, নিজ নিজ ধর্মাচরণের জন্য তাঁদের হেনস্থা করাই লক্ষ্য। তাই মিথ্যা এবং সাজানো অভিযোগে, ওই আইনে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। 


খ্রিস্টানদের হেনস্থা, তাঁদের উপর হামলার ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী মোদি আলোচনার ডাক দিলেও, খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের ৩২০০ প্রতিনিধি ওই আলোচনা থেকে নিজেদের সরিয়ে নেন বলে জানানো  হয়েছে রিপোর্টে। বলা হয়েছে, সরকারের মন্ত্রী-আধিকারিকরা যেভাবে প্রকাশ্যে বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য করেন, ঘৃণা ভাষণ দেন, তার জেরেই আলোচনায় অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। 


গোহত্যার দোহাই দিয়ে মুসলিমদের উপর হামলার পাশাপাশি গোমাংস বিক্রির অভিযোগেও অহরহ হিংসাত্মক ঘটনা ঘটে চলেছে বলে দাবি করা হয়েছে রিপোর্টে। আমেরিকায় ভারতের দূতাবাসের তরফে এ নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি যদিও। তবে দিল্লির তরফে অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। তাদের দাবি,  প্রত্যেক দেশবাসী ভারত সরকারের জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের আওতায় পড়েন। 


এর আগে, International Religious Freedom রিপোর্টে বলা হয়, ১ জুলাই থেকে ভারতে যে নয়া অপরাধ আইন কার্যকর হওয়ার কথা, তাতে মিথ্যে প্রতিশ্রুতি, পরিচয় লুকিয়ে কোনও মহিলার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হওয়া এবং বিয়ে করাকেও অপরাধের আওতায় ফেলা হয়েছে। আসলে মুসলিম ছেলের সঙ্গে হিন্দু মেয়ের সম্পর্ক এবং বিয়ে রুখতেই এই আইন বলে অভিযোগ করা হয়।