নয়াদিল্লি: আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রত্যাবর্তন ঘটিয়েই শুল্কযুদ্ধে নেমেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভারত, চিন-সহ বিশ্বের তাবড় দেশের উপর শুল্কের পাল্টা শুল্ক চাপিয়েছেন তিনি। তাঁর শুল্কের খাঁড়া থেকে রক্ষা পেল না ভারত মহাসাগরের জনশূন্য Heard and McDonald দ্বীপপুঞ্জও। আন্টার্কটিকার কাছাকাছি, ভারত মহাসাগরের উপর অবস্থিত Heard and McDonald দ্বীপপুঞ্জের উপর ১০ শতাংশ শুল্ক বসিয়েছেন ট্রাম্প। কিন্তু সেই শুল্ক মেটাবে কে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কারণ দ্বীপের বাসিন্দা বলতে পেঙ্গুইন ও পাখির দল। সম্পত্তি বলতে হিমবাহ। সেখান থেকে কী ভাবে শুল্ক আদায় করবে আমেরিকা, ভেবে কূল-কিনারা করতে পারছে না গোটা বিশ্ব। (US Tariff)
শুল্কের পাল্টা শুল্ক ঘোষণার দিন ২ এপ্রিলকে ‘মুক্তির দিন’ ঘোষণা করেছেন ট্রাম্প। কোন দেশের উপর কত শুল্ক, তার ধাপগুলিও তুলে ধরা হয়েছে। সেই নিরিখে একেবারে নীচের দিকেই রয়েছে Heard and McDonald দ্বীপপুঞ্জ। শুল্কের পাল্টা শুল্ক ঘোষণা করতে গিয়ে একটি মানচিত্র তুলে ধরেন ট্রাম্প। কোন দেশের উপর কত শুল্ক চাপছে, আঙুল দিয়ে নির্দেশ করেন সেই মানচিত্রের দিকে। Heard and McDonald দ্বীপপুঞ্জকে দেখিয়ে তিনি জানান, ওই দ্বীপ আমেরিকার উপর ১০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছে। তাঁর সরকার ‘ডিসকাউন্ট’ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাই Heard and McDonald দ্বীপপুঞ্জের উপর ১০ শতাংশ হারেই শুল্ক চাপানো হচ্ছে। (Donald Trump)
কিন্তু জনমানবহীন ওই দ্বীপ থেকে কে আমেরিকার পণ্যের উপর শুল্ক চাপাল, আর আমেরিকার চাপানো শুল্কই বা মেটাবে কে? উত্তর মেলেনি। এ নিয়ে হোয়াইট হাউসের এক আধিকারিককে উদ্ধৃত করেছে Axios. তিনি জানিয়েছেন, Heard and McDonald দ্বীপপুঞ্জ অস্ট্রেলিয়ার ভূখণ্ড হিসেবে চিহ্নিত হয়। অস্ট্রেলিয়া সরকারের একটি ওয়েবসাইটে Heard and McDonald দ্বীপপুঞ্জকে অন্যতম 'দুর্গম এবং প্রান্তিক স্থান' হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার 'আন্টার্ক প্রোগ্রাম' অনুযায়ী, পশ্চিমে পার্থের Fremantle বন্দর থেকে জাহাজে চেপে Heard and McDonald দ্বীপপুঞ্জে পৌঁছতে ১০ দিন সময় লাগে। ওই দ্বীপপুঞ্জে পেঙ্গুইন, সিল এবং পাখি ছাড়া কারও বাস নেই। পেঙ্গুইন ডাঙায় থাকলেও, সিলের আশ্রয়স্থল সাগরের জল। UNESCO-র হেরিটেজ তালিকাতেও রয়েছে Heard and McDonald দ্বীপপুঞ্জ. কিন্তু গত ১০ বছরে সেখানে মানুষের পা পড়েনি বলে জানা যাচ্ছে। তাই ট্রাম্পের চাপানো শুল্ক কে মেটাবে উঠছে প্রশ্ন।
এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া চাইলে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবানিজের বক্তব্য, 'পৃথিবীর কোথাও নিরাপদ নয়। অনিশ্চিত সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু অস্ট্রেলীয়রা একটি বিষয়ে নিশ্চিন্ত হতে পারেন, এই শুল্ক অপ্রত্যাশিত কিছু নয়, কিন্তু অযৌক্তিক। অস্ট্রেলিয়ার থেকে অন্য দেশ এতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তবে এব্যাপারে অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে বেশি প্রস্তুত কেউ নয়"।