নয়াদিল্লি: ভারত ভ্রমণ নিয়ে দেশের নাগরিকদের সতর্ক করল আমেরিকার ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকার। সেই মর্মে দ্বিস্তরীয় নির্দেশিকা জারি করেছে US Embassy & Consulates in India. বলা হয়েছে, ভারতে ধর্ষণ, হিংসা, সন্ত্রাসের ঘটনা লাগাতার বেড়ে চলেছে। এমন পরিস্থিতিতে ভারত ভ্রমণ থেকে বিরত থাকাই ভাল। বিশেষ করে মহিলাদের একা একা ভারতে আসা উচিত নয়। ভারতে বসবাসকারী আমেরিকার নাগরিকদেরও সতর্ক করা হয়েছে। (US Travel Advisory for India)
নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ‘ভারতে যে হারে অপরাধ এবং সন্ত্রাস বেড়ে চলেছে, তাতে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। কিছু এলাকায় বিপদ বেশি। হিংসাত্মক অপরাধ, সন্ত্রাসী হামলা ঘটে ভারতে। ভারতে ধর্ষণের মতো অপরাধ সবচেয়ে বেশি। হিংসাত্মক অপরাধের মধ্যে যৌন নির্যাতনও রয়েছে। পর্যটক অধ্যুষিত জায়গা এবং অন্যত্রও এমন অপরাধ ঘটে’। (US-India Relations)
নাগরিক সুরক্ষার দিকটি বিবেচনা করে ভারতে সম্পর্কে সম্প্রতি ওই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ভারতে যে অপরাধ সবচেয়ে বাড়ছে, তার মধ্যে অন্যতম হল ধর্ষণ। কোনও সতর্কীকরণ ছাড়াই হামলা চালাতে পারে সন্ত্রাসবাদীরা। পর্যটন কেন্দ্র, পরিবহণ কেন্দ্র, হাজার, শপিং মল, সরকারি প্রতিষ্ঠানে হামলা হতে পারে। ভারতের গ্রামাঞ্চলে আমেরিকার নাগরিকদের সুরক্ষা দেওয়া সেভাবে সম্ভব নয় বলেও জানানো হয়েছে।
যে যে জায়গায় নাগরিকদের জরুরি পরিষেবা দেওয়া যাবে না, তার নামও প্রকাশ করা হয়েছে আমেরিকার দূতাবাস ও কনস্যুলেটের তরফে। বলা হয়েছে, মাওবাদী অধ্যুষিত মহারাষ্ট্রের পূর্ব অংশ থেকে, তেলঙ্গানার উত্তর, পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম অংশে জরুরি পরিষেবা দিতে অক্ষম তারা। ওই সমস্ত এলাকায় গেলে বিশেষ অনুমতিপত্র নিয়ে তবেই যেতে বলা হয়েছে।
নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ভারতে স্যাটেলাইট ফোন বা জিপিএস ডিভাইস সঙ্গে না রাখাই ভাল। এতে জরিমানা বা জেল হতে পারে। একা একা ভারতে না ঢোকাই ভাল, বিশেষ করে মহিলা হলে। নিজের নিরাপত্তার কথা ভাবতে হবে, সতর্ক থাকতে হবে সবসময়। ভারত ভ্রমণে যাওয়ার আগে বিমা করিয়ে রাখতে বলা হয়েছে।
ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরকে সন্ত্রাস উপদ্রুত ও অশান্ত এলাকা বলে উল্লেখ করেছে আমেরিকা। বলা হয়েছে, নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন এলাকায় নাশকতা ঘটে, শ্রীনগর, গুলমার্গ, পহেলগাঁওয়ের মতো পর্যটন কেন্দ্র উপদ্রুত। সীমান্ত এলাকা থেকে দূরে থাকা ভাল। মহারাষ্ট্রের পূর্ব, তেলঙ্গানার উত্তর এবং পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম অংশ মাওবাদী উপদ্রুত। তেলঙ্গানা লাগোয়া ছত্তীসগঢ় ও ঝাড়খণ্ডের কিছু অংশ, অন্ধ্রপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশায় সরকারি আধিকারিকরা নকশাল হামলার শিকার হন। বিহার, ঝাড়খণ্ড, ছত্তীসগঢ়, পশ্চিমবঙ্গ, মেঘালয়, ওড়িশার মতো রাজ্যে যাওয়ার ক্ষেত্রে, রাজ্যের রাজধানীর বাইরে গেলে বিশেষ অনুমতি নেওয়া প্রয়োজন। মণিপুরে ঢুকতে নিষেধ করা হয়েছে।
আমেরিকার এই ভ্রমণ নির্দেশিকা ঘিরে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। তৃণমূলের সাংসদ সাগরিকা ঘোষ লেখেন, ' "অব কি বার ট্রাম্প সরকার, আমার বন্ধু ডোনাল্ড ট্রাম্প", নরেন্দ্র মোদি এবং উন্মাদ দক্ষিণপন্থী, যাঁরা ট্রাম্প সরকারকে দু'হাত বাড়িয়ে আলিঙ্গন করেছিলেন, তাঁরা জোর ধাক্কা খেলেন। আমেরিকার ভ্রমণ নির্দেশিকায় ভারতকে 'ধর্ষণ, হিংসা ও সন্ত্রাসের দেশ' বলা হয়েছে'।
কেরল কংগ্রেসের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডলে লেখা হয়, 'মোদির মুকুটে আরও একটি পালক যুক্ত হল'।