পার্থপ্রতিম ঘোষ, উত্তরকাশী : শেষ পর্যন্ত মানুষের ত্রাতা মানুষই। পাহাড় কাটতে গিয়ে বিকল হয়ে গিয়েছিল যন্ত্র। কিন্তু ১৭ দিনের মাথায় দেশের অন্যতম সাফল্যের উদ্ধারকাজ সম্পন্ন হল মানুষের হাতেই। গতকাল দুপুর থেকে অভিজ্ঞ ১২ জন শ্রমিকের দল শুরু করেছিল উদ্ধারকাজ। আর মঙ্গলবার ঘড়িতে রাত ৮ টা বাজার আগেই সাফল্য। তারপর ঘণ্টাখানেকের মধ্যে সিল্কিয়ারা-বারকোট সুড়ঙ্গে (Uttarakhand Tunnel Rescue) আটকে থাকা ৪১ জন শ্রমিককেই উদ্ধার করার কাজ সম্পন্ন হয়।
বাংলার ৩ পরিবার সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় যখন স্বস্তির নিঃশ্বাস। তখন কার্যত যুদ্ধজয়ের হাসি উদ্ধারকারী দলের। ১২ জন শ্রমিকরা সেলিব্রেশনের মাঝে একগাল হাসি নিয়ে বললেন, 'মানুষের প্রাণ বাঁচাতে পেরেছি, এর থেকে বড় আর কী হতে পারে। এই ভাল লাগা-আনন্দের সীমা নেই। গতকাল দুপুর ৩ টে থেকে আমরা কাজ শুরু করেছিলাম। মাঝের সময়টায় ঘুম-খাওয়া সব ভুলে গিয়েছিলাম। উদ্ধার না করা পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যাব বলে পণ করেছিলাম আমরা।' শেষপর্যন্ত সাফল্য পেয়ে তাই স্বাভাবিকভাবেই যুদ্ধজয়ের হাসি।
সিল্কিয়ারার দিক থেকে বারাকোটের দিকে সুড়ঙ্গ পথে এগোনোর সময় ধস নেমে আটকে পড়েছিলেন ৪১ জন শ্রমিক। গত ১২ নভেম্বর ঘটেছিল যে বিপর্যয়। যারপর থেকে টানা উদ্ধারকাজ চললেও কিছুতেই মিলছিল না আলোর খোঁজ। উত্তরকাশীর পাহাড়ের ভূ-অভ্যন্তরে বিভিন্ন সমস্যায় বারবার আটকে যাচ্ছিল উদ্ধারকাজ। মার্কিন অগার যন্ত্র উদ্ধারে নেমে ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছিল।
যারপর কার্যত বাধ্য হয়ে উলম্ব সুড়ঙ্গ পথে উদ্ধারকাজের সঙ্গে শুরু করা হয় ভার্টিক্যাল ড্রিলিং। উল্টোদিকে সুড়ঙ্গ পথে পৌঁছনোর ক্ষেত্রেও ছিল সমস্ত চেষ্টা। কিন্তু সবথেকে কাছাকাছি ও কঠিন পরিস্থিতিতে ছিল সুড়ঙ্গ পথে এগোনোর কাজই। শেষ পর্যন্ত অভিজ্ঞ রাট ড্রিলারদের একটি দলকে ডেকে পাঠানো হয়। যন্ত্রের ব্যর্থতার পর ভরসা রাখা হয় মানুষের দক্ষতাতে। শেষপর্যন্ত সেই পথেই এল সাফল্য।
শেষমেশ ৪০০ ঘণ্টার লড়াই শেষে সুড়ঙ্গ থেকে ৪১ জন শ্রমিককেই উদ্ধার কাজ সম্ভব হল। মৃত্যুর সঙ্গে যুদ্ধে শেষমেশ মানুষের হাত ধরেই জীবনেরই জয় হল। মুক্তির আলো দেখলেন বাংলার ৩ জন সহ মোট ৪১ জন শ্রমিক।
উত্তরাখণ্ড সুড়ঙ্গে উদ্ধারকাজ- সরাসরি সব আপডেট
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।