দেহরাদূণ: বিদেশি মেশিনও যখন মুখ থুবড়ে পড়ল, শেষরক্ষা হওয়া কঠিন বলে ধরে নিয়েছিলেন অনেকেই। প্রমাদ গুনছিলেন উত্তরাখণ্ডের সুড়ঙ্গে আটকে পড়া ৪১ জন শ্রমিকের পরিবারও। ছেলের মুখ ফের দেখতে পাবেন কিনা, হাত দিয়ে ছুঁতে পারবেন কিনা, এই চিন্তাই তাড়িয়ে বেড়াচ্ছিল তাঁদের। কিন্তু তীব্র কাটাছেঁড়ার মুখে পড়েও হাত তুলে নেননি কিছু মানুষ। বরং উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে কার্যত লেগে-পড়ে থেকে ৪১ জন শ্রমিকদের নিরাপদে বের করে আনলেন তাঁরা। (Uttarakhand Tunnel Rescue)


IAS অফিসার নীরজ খৈরওয়াল


সিল্কয়ারা সুড়ঙ্গ বিপর্যয়ের ঘটনায় নোডাল অফিসার করা হয় আইএএস অফিসার নীরজ খৈরওয়ালকে। একেবারে গোড়া থেকে  উদ্ধাকার্য তদারকিতে মোতায়েন ছিলেন তিনি। টানা সুড়ঙ্গের ভিতরে এবং বাইরে কাটিয়েছেন। উদ্ধারকার্য তদারকি করা, প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া এবং অগ্রগতির প্রতি মুহূর্তের আপডেট মুখ্যমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীর দফতের পৌঁছে দেওয়ার কাজও ছিল তাঁরই। তিনি উত্তরাখণ্ডে বিজেপি সরকারের সচিবও। (Uttarakhand Tunnel Collapse)


মাইক্রো-টানেলিং বিশেষজ্ঞ ক্রিস কুমার


মাইক্রো-টানেলিং বিশেষজ্ঞ ক্রিস কুপার অত্যন্ত অভিজ্ঞ। বিগত কয়েক দশক ধরে সুড়ঙ্গ নিয়ে কাজ করছেন তিনি।  গত ১৮ নভেম্বর সিল্কয়ারা সুড়ঙ্গের দুর্ঘটনাস্থলে হাজির হন তিনি। চার্টার্ড ইঞ্জিনিয়ার ক্রিস, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পরিকাঠামোতেও দক্ষ। মেট্রোর সুড়ঙ্গ, বাঁধ, রেলের সুড়ঙ্গ, খনি প্রকল্পে দীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে।  ঋষিকেষের কর্ণপ্রয়াগ রেল প্রকল্পে পরামর্শদাতা হিসেবেও কাজ করছেন।


আরও পড়ুন: প্রকৃতির সামনে বার বার ব্যর্থ প্রযুক্তি, মানুষের হাতেই এল সাফল্য, উত্তরাখণ্ডের সুড়ঙ্গে আলো ফুটল যেভাবে...


অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল সৈয়দ আতা হাসনাইন, NDRF সদস্য


ভারতীয় সেনা থেকে অবসরগ্রহণের পর বর্তমানে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ম্যানেজমেন্ট সংক্রান্ত কাজকর্ম দেখেন সৈয়দ আতা হাসনাইন।  বিপর্যয় মোকাবিলার কাজকর্মে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন তিনিই। উদ্ধারকার্য চালানোর পরিকল্পনা থেকে বায়ুসেনার কপ্টারে করে শ্রমিকদের নিরাপদে হাসপাতালে পৌঁছনো, সবের পরিকল্পনা বেরোয় তাঁর মাথা থেকেই।


টানেলিং বিশেষজ্ঞ আর্নল্ড ডিক্স


মাটির নিচে সুড়ঙ্গ গড়ে তোলায় দক্ষ আর্নল্ড। গবেষণার কাজেও যুক্ত।  গোড়া থেকে উদ্ধারকার্যের তদারকি করছিলেন তিনিই। কোন পথে শ্রমিকদের বের করে আনা যেতে পারে, তার প্রাথমিক পরিকল্পনা তাঁরই মস্তিষ্কপ্রসূত বলে জানা গিয়েছে।


ব়্যাট-হোল মাইনিং বিশেষজ্ঞ


বিদেশি যন্ত্রও যখন হাত তুলে নিচ্ছে, সেই সময় পেশিশক্তির উপরই ভরসা করা হয়। মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে যাঁরা ঘটনার মোড় পাল্টে দিলেন, তারা হলেন  ‘ব়্যাট-হোল মাইনিং’ বিশেষজ্ঞ। কয়লা খনিতে সঙ্কীর্ণ গর্ত খুঁড়ে কয়লা উত্তোলনের প্রক্রিয়াকে বলে ‘ব়্যাট-হোল মাইনিং’। অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এই পদ্ধতি নিষিদ্ধ করেছিল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল। উত্তরাখণ্ডে সেই নিষিদ্ধ পদ্ধতিই সাফল্য এনে দিল শেষ মেশ।