উত্তরকাশী : যেন সাক্ষাৎ মৃত্যুদূত। বিধ্বংসী ক্ষীরগঙ্গার জলের তোড়ে, নিমেষে ভেসে যায় বাড়ি-ঘর। যেন সহ তাসের ঘর। প্রবল মেঘ ভাঙা বৃষ্টি আর হড়পা বানে মুহূর্তে ধুলোয় মিশল একটা জনপদ। সারা উত্তরকাশী জুড়েই এমন প্রাকৃতিক দুর্যোগ, আশঙ্কায় আপাতত কেদারনাথ যাত্রা বন্ধ করল প্রশাসন। এরই মধ্যে এসেছে ভয়ঙ্কর এক খবর। খবর, ক্ষীর গঙ্গা নদীর ক্ষিপ্র গতিতে নিমেষে নিঃশেষ হয়েছে একটি গ্রাম। সেই ধ্বংসাবশেষের নিচে চাপা পড়েছে প্রাচীন কল্প কেদার মন্দিরের চূড়াও। বহু বছর আগেই কোনও এক বিপর্যয়ে এই মন্দিরটির অধিকাংশই মাটির নিচে ঢুকে যায়। মন্দিরটির চূড়া শুধুমাত্র দৃশ্যমান ছিল। এই মন্দিরটির সঙ্গে কেদারনাথ ধামের স্থাপত্যের অদ্ভূত সাদৃশ্য রয়েছে।
নিউজ ১৮ সূত্রে খবর, ১৯৪৫ সালে, খননের ফলে মাটির নিচে কয়েক ফুট গভীরে এই প্রাচীন শিব মন্দিরটি আবিষ্কৃত হয়। মন্দিরের কাঠামো কেদারনাথ মন্দিরের মতোই । মন্দিরটির সিংহভাগই মাটির নিচে। ক্ষীর গঙ্গার জল প্রায়শই গর্ভগৃহে অবস্থিত 'শিবলিঙ্গের' উপর প্রবাহিত হয়।এই মন্দির ঘিরে অনেক লোককথা , অনেক বিশ্বাস, অনেক কিংবদন্তী। গর্ভগৃহে অবস্থিত 'শিবলিঙ্গ'টি নন্দীর পিঠের মতো। সেই মন্দির নাকি পুরোপুরি ধ্বংসস্তূপের নিচে এখন।
মেঘভাঙা বৃষ্টিতে উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশীতে প্রবল বিপর্যয়ে বহু প্রাণ সঙ্কটের মুখে। ধরালী গ্রামে হড়পা বানে মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে ৪ জনের। তবে উদ্ধারকারীরা নিশ্চিত সংখ্যাটা আরও বাড়বে। নিখোঁজ শতাধিক, বলছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম। অন্তত পক্ষে, ৪ থেকে ৫ সেনা জওয়ানেরও নিখোঁজ থাকার আশঙ্কা করছে জেলা প্রশাসন। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে বহু এলাকা। বিপর্যয়ের জেরে, বন্ধ করা হয়েছে কেদারনাথ ধাম যাত্রা।
একদিকে যখন ভয় ধরাচ্ছে উত্তরাখণ্ডের ছবি, তখন, মেঘভাঙা বৃষ্টিতে দুর্যোগ হিমাচল প্রদেশেও। ধস নেমেছে বিভিন্ন জায়গায়। বন্ধ হয়ে গিয়েছে জাতীয় সড়ক সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। পর্যটকদের সঙ্গে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয়েরা। প্রশাসন সূত্রে খবর, সোলান জেলা মারাত্মক ভাবে প্রভাবিত হয়েছে। চক্কী মোড়ে হাইওয়ে বন্ধ। বুধবার সকালে ভূমিধসের কারণে চণ্ডীগড়-শিমলা জাতীয় সড়ক বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ধসের কারণে চণ্ডীগড়-মনালী হাইওয়েও বন্ধ।
আবহবিদরা বলছেন, প্রায় সাড়ে বারো হাজার ফুট ওপর থেকে প্রায় ৪৫ কিমি বেগে উত্তরাখণ্ডের এই গ্রামের ওপর নেমে আসে হড়পা বান।