নয়াদিল্লি: একবার যাঁরা করোনা থেকে সেরে উঠেছেন তাঁদের আবার করোনা আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা ক্ষীণ, কারণ তাঁদের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে গিয়েছে, যা তাঁদের দ্বিতীয়বার সংক্রমিত হওয়া থেকে রক্ষা করে। জানালেন এইমসের ডিরেক্টর রণদীপ গুলারিয়া।


করোনা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিশেষ টাস্কফোর্সের সদস্য গুলারিয়া বলেছেন, একবার করোনা কাটিয়ে উঠলে ফের তাতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা নেই বললেই চলে, কারণ ততদিনে আপনার রক্তে বিশেষ কিছু অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে, যা এক ধরনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দেয়। ফলে ফের সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা অতি ক্ষীণ বা হলেও তা বাড়াবাড়ি কিছু হবে না ধরে নেওয়া যায়। এমনকী যদি একবার সেরে ওঠার পর আপনি করোনা আক্রান্তদের সংস্পর্শেও আসেন, তাহলেও আপনার খুব বেশি আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কম।

কিন্তু একই সঙ্গে গুলারিয়া বলেছেন, একবার করোনা থেকে সেরে ওঠার পর সেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শরীরে কতদিন থাকছে, সেটা একটা প্রশ্ন। কয়েক সপ্তাহ না কয়েক মাস না আরও বেশি?  এ ব্যাপারে এখনও স্পষ্ট জানা যায়নি। তবে এটা একটা নিরাপত্তা ঠিকই, বলেছেন তিনি। দেশে কি করোনার গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়েছে?  এইমস ডিরেক্টর বলেছেন, ৭০-৮০ শতাংশ করোনা আক্রান্ত মোটামুটি ৮-১০টি শহরে সীমিত, যেগুলি করোনা হটস্পট। ফলে বাকি দেশে গোষ্ঠী সংক্রমণ ঘটার কোনও লক্ষণ নেই। এই শহরগুলিতে কিছুটা গোষ্ঠী সংক্রমণ ঘটেছে ঠিকই কারণ  দিল্লি, মুম্বইয়ের মত শহরে আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। পুনের মত কিছু শহরে সংক্রমিতের সংখ্যা কমছে, তা আশার কথা। কিন্তু দিল্লি, মুম্বইয়ে আক্রান্ত বাড়ছে, গোটা বিশ্বেই ঘটছে এমনটা।

বর্ষায় করোনা কমে যাবে এমন কোনও আশার কথা বলেননি গুলারিয়া। যখন গ্রীষ্ম পড়েছিল, তখন অনেকে বলেছিলেন, গরম পড়ার সঙ্গে সঙ্গে করোনা কমবে, তা কিন্তু হয়নি। তবে বর্ষায় রোগ নির্ণয়ের ধরন পাল্টাবে কারণ এই সময়টা ডেঙ্গি, চিকুনগুনিয়ার মত রোগ ব্যাপকহারে হয়। ফলে কোনটা করোনা আর কোনটা নয়, তা বুঝতে চিকিৎসকদের সমস্যা হতে পারে।

কোনটা ভাল, হোম না ইনস্টিটিউশনাল কোয়ারান্টাইন? এইমস ডিরেক্টর বলেছেন, প্রথমটা যদি একজন সংক্রমিত হন, আর দ্বিতীয়টা, পরিবারের বাকিদের জন্য। যদি অল্পস্বল্প লক্ষণ থাকে, তবে সম্ভব হলে বাড়িতেই আইসোলেশনে থাকুন, যদি তেমন সুবিধে থাকে। এ জন্য দরকার আলাদা একটা ঘর আর অ্যাটাচড টয়লেট। পরিবারের এমন একজন চাই, যিনি আপনার খেয়াল রাখবেন, আর পরিস্থিতি খারাপ হলে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার সুবিধে, যাতে প্রয়োজনে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যায় আপনাকে।  আপনাকে দেখতে হবে, যাতে সংক্রমণ আপনার থেকে অন্যদের মধ্যে না ছড়ায়। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, সংক্রমিতকে আলাদা রাখার জায়গা নেই, তা সত্ত্বেও এক সঙ্গেই করোনা রোগীকে রাখা হচ্ছে। ফলে দ্রুত ছড়াচ্ছে করোনা। দিল্লিতে এমন ঘটনা দেখা গিয়েছে।

হোম আইসোলেশনে থাকা রোগীকে কখন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া জরুরি? যদি শ্বাসকষ্ট দেখা যায়, বুকে ব্যথা বা অন্য ধরনের অস্বস্তি, ঘুম ঘুম ভাব, বাড়ির লোকের কথায় সাড়া দিতে পারছেন না, নখ বা ঠোঁটের রং নীলচে হতে শুরু করে, তবে চিকিৎসকের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথাবার্তা বলুন। এর মানে শরীরে অক্সিজেন কমে যাচ্ছে আপনার।