নয়াদিল্লি: জল্পনা চলছিল বেশ কিছু দিন ধরেই। সেই মতোই কংগ্রেসে যোগ দিলেন দুই কুস্তিগীর বিনেশ ফোগত এবং বজরং পুনিয়া। নর্দার্ন রেলওয়েজের চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়ে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু সেই নিয়ে এবার টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। রেল সূত্রে জানা যাচ্ছে, বিনেশ এবং বজরং ইস্তফা দিলেও, তাঁদের ইস্তফাপত্র গৃহীত হয়নি এখনও পর্যন্ত।  ইস্তফাপত্র গৃহীত না হওয়া পর্যন্ত কোনও দলে যোগ দিতে বা নির্বাচনী রাজনীতিতে না লেখাতে পারবেন না তাঁরা। (Vinesh Phogat)


হরিয়ানা বিধানসভা নির্বাচনের আগে শুক্রবার আনুষ্ঠানিক ভাবে কংগ্রেসে যোগ দেন বিনেশ এবং বজরং। তবে দলে নাম লেখানোর আগে নর্দার্ন রেলওয়েজের অফিসার অন স্পেশাল ডিউটির (OSD) চাকরি থেকে ইস্তফা দেন বিনেশ। প্রায় একই সময় বজরংও ওই চাকরি থেকে ইস্তফা দেন। গতকাল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার কিছু ক্ষণের মধ্যে দলে গুরুত্বপূর্ণ পদও পেয়ে যান তাঁরা। বিনেশকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়, বজরং জায়গা পান সর্বভারতীয় কিসান কংগ্রেসে। সংগঠনের ওয়র্কিং চেয়ারম্যান করা হয় তাঁকে। (Bajrang Punia)


চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিনেশ লেখেন, 'রেলওয়েজে চাকরির সুযোগ পাওয়া আমার কাছে অত্যন্ত গর্বের বিষয় ছিল। জীবনের এই সন্ধিক্ষণে রেলওয়ের সেই টাকরি থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলাম। ভারতীয় রেলওয়েজের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে ইস্তফাপত্র জমা দিয়েছি। ভারতীয় রেলওয়েজ পরিবারের কাছে চিরকাল কৃতজ্ঞ থাকব আমি দেশের সেবা করার সুযোগ দেওয়ার জন্য'। (Haryana Assembly Elections 2024)


কিন্তু চাকরিতে ইস্তফা এবং রাজনীতিতে তাঁদের আগমন ঘিরে টানাপো়ড়েন শুরু হয়েছে। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, বিনেশ এবং বজরংয়ের ইস্তফাপত্র এখনও পর্যন্ত গৃহীত হয়নি। ইস্তফাপত্র গৃহীত হবে না, তা বলা হচ্ছে না যদিও, কিন্তু রেল ইস্তফাপত্র গ্রহণ করে অনুমতি না দেওয়া পর্যন্ত কোনও দলে যোগ দিতে পারবেন না তাঁরা, নির্বাচনেও লড়তে পারবেন না। 


রেলের চাকরি থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর বিনেশ এবং বজরংকে শোকজ করা হয়েছে বলে গতকাল দাবি করেন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কেসি বেণুগোপাল। রাহুল গাঁধীর সঙ্গে ছবি সামনে আসার পর তাঁদের কেন শোকজ ধরানো হল, প্রশ্ন তোলেন তিনি। শুধু তাই নয়, রাজনীতিতে যোগদানের খবরে রেলের তরফে বিনেশ এবং বজরংকে সেই নিয়ে বাধাদানের চেষ্টা হয় বলেও জানান। রেল কর্তৃপক্ষের রাজনীতি নিয়ে মাথা ঘামানো উচিত নয়, বরং বিনেশ এবং বজরংকে অব্যাহতি দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন বেণুগোপাল। রেল সূত্রে যদিও দাবি করা হয়েছে, শুক্রবার নয়, বুধবার নোটিস ধরানো হয় বিনেশ এবং বজরংকে। সার্ভিস রুল অনুযায়ী, রাজনৈতিক কাজকর্মে লিপ্ত হওয়ার অনুমতি নেই কুস্তিগীরদের। তাই জবাব চাওয়া হয়েছিল। সেই নোটিস পাওয়ার পরই ইস্তফা দেন বিনেশ এবং বজরং।


ভারতীয় কুস্তি ফেডারেশনের প্রাক্তন প্রধান তথা প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ ব্রিজভূষণ সিংহের বিরুদ্ধে যৌন নিগ্রহের যে অভিযোগ ওঠে, তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের একেবারে অগ্রভাগে ছিলেন বিনেশ, বজরং। যৌন নিগ্রহের পাশাপাশি, মহিলা কুস্তিগীরদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে। সেই সময় টেনে হিঁচড়ে তাঁদের প্রতিবাদস্থল থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ভিডিও দেখেছিল গোটা দেশ। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে দেশের মাথা উঁচু করেন যাঁরা, সেই কুস্তিগীরদের সঙ্গে অমন আচরণে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। এর পর সম্প্রতি প্যারিস অলিম্পিক্স থেকে ছিটকে যান বিনেশ, যা নিয়েও তীব্র কাটাছেঁড়া শুরু হয়। বিনেশের ছিটকে যাওয়ার নেপথ্যে ষড়যন্ত্রের তত্ত্বও উঠে আসে। সেই আবহেই বিনেশ যখন দেশে ফেরেন, তাঁর পাশে দেখা যায় কংগ্রেস নেতৃত্বকে। 


আরও পড়ুন: Vinesh Phogat: কংগ্রেসে যোগ দিয়েই নির্বাচনে প্রার্থী হলেন বিনেশ, বললেন, 'BJP ছাড়া পাশে ছিলেন বাকি সকলেই'