জয়পুর: ট্রেনে বসার জায়গা দখল নিয়ে ঠেলাঠেলি নয়। চালকের আসন দখল নিয়ে ঝগড়া-মারামারি। নতুন বন্দেভারত ট্রেনে হাতাহাতিতে জড়ালেন দুই লোকো পাইলট। পরস্পরের জামা-কাপড় ছিঁড়ে দিলেন তাঁরা। এমনকি রেলের অন্য কর্মীরাও জড়িয়ে পড়লেন ধস্তাধস্তি, স্লোগানবাজিতে। আর এসবের মধ্যে হতাশ চোখে স্টেশনে দাঁড়িয়ে রইলেন যাত্রীরা। (Viral Video)
রাজস্থানের গঙ্গাপুর সিটি জংশনে এই ঘটনা ঘটেছে। আগ্রা ও উদয়পুরের মধ্যে অতি সম্প্রতিই সেখানে বন্দেভারত ট্রেন টালু হয়। উদ্বোধনের পর সেই নতুন ট্রেন চালানো নিয়েই ঝামেলা বাধে লোকো পাইলটদের মধ্যে। সেই ঝামেলায় যোগ দেন আগরা এবং কোটা ডিভিশনের রেলকর্মীরাও।
সোশ্যাল মিডিয়ায় গোটা ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে ইতিমধ্যেই। তাতে ধস্তাধস্তি, ঠেলাঠেলি চোখে পড়েছে। আবার শোনা গিয়েছে 'মুর্দাবাদ' স্লোগানও। (Vande Bharat Express)
ওই ভিডিও-য় দেখা গিয়েছে, বেশ কয়েক জন লোকো পাইলট দরজা দিয়ে ওঠার জন্য ধস্তাধস্তি করছেন। ধাক্কা দিচ্ছেন পরস্পরকে। সেই অবস্থায় জানলা দিয়ে ভিতরে ঢুকে পড়েন তিন জন। দরজা খুলে দেন তাঁরা। এর পর চালকের কামরায় ঢুকে এক লোকো পাইলট এবং তাঁর সহকারীকে টেনে-হিঁচড়ে বের করে আনা হয়। ট্রেনের ভিতর, চালকের কামরায় স্টিয়ারিং হুইলে হাত রাখা নিয়ে ধস্তাধস্তি চলছিল যেমন, প্ল্যাটফর্মের উপরও তখন ধুন্ধুমার দুই পক্ষের মধ্যে। জামাও ছিঁড়ে দেন পরস্পরের। ফলে দীর্ঘ ক্ষণ স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকে ট্রেন, দাঁড়িয়ে থাকেন যাত্রীরাও। পুলিশ মধ্যস্থতা করতে এগোলেও, সুরাহা হয়নি।
রেল কর্মীরা জানিয়েছেন, আগরার লোকো পাইলট এবং তাঁর সহকারীকে ট্রেন থেকে নেমে যেতে বলা হয়। গঙ্গাপুরের রেল কর্মীরা ট্রেনের দখল নেন, যাতে তাঁরা চালিয়ে নিয়ে যেতে পারেন ট্রেনটিকে। আগরার লোকো পাইলট এবং তাঁর সহকারী রাজি না হওয়াতে ঝামেলা বাধে। তাতে আগরার লোকো পাইলট এবং তাঁর সহকারী ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেন। এর পরই ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়। জানলার কাচ ভেঙে ট্রেনের ভিতরে ঢুকে যান কয়েক জন। ভিতরের তালা ভেঙে আগরার লোকো পাইলট এবং সহকারীকে বের করে দেন। প্ল্যাটফর্মে নামিয়ে চলে মারধর। গার্ডরুমের তালা, জানলার কাচ এই ঝামেলায় ভেঙে গিয়েছে।
গোটা ঘটনায় তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ছে ওয়েস্টার্ন-সেন্ট্রাল, নর্থ-ওয়েস্টার্ন এবং নর্দার্ন রেলওয়ে। কারণ তিনটি বিভাগের তরফেই কর্মীদের ট্রেন চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু ওই তিন বিভাগের মধ্যে রোজই তা নিয়ে ঝামেলা বাধে। ভাল ট্রেন চালানোর উপরই বেতনবৃদ্ধি এবং পদোন্নতি নির্ভর করে। তাই বন্দেভারত চালানো নিয়ে হুড়োহুড়ি করেন লোকো পাইলটরা। প্রতিদিনই প্রায় যাত্রীদের এমন ঝামেলার দৃশ্যের সাক্ষী হতে হয় বলে জানা গিয়েছে। আজ বলে নয়, উদ্বোধনের সময় থেকেই তিন বিভাগের মধ্যে ঝামেলা চলছে।