ইম্ফল: প্রথমে গণধর্ষণ (Gangrape), তার পর সম্পূর্ণ নগ্ন করে (Naked) রাস্তায় হাঁটানো (Women Paraded)। এতেই শেষ নয়। নির্যাতিতারা যখন রেহাইয়ের আর্জি জানিয়ে কাঁদতে কাঁদতে হাঁটছেন, তখনও তাঁদের দেদার 'শ্লীলতাহানি' চলেছে। হিংসা-জর্জরিত মণিপুরে (Manipur) নারী-নিগ্রহের এমন ভিডিও ভাইরাল হতেই শিউরে উঠেছে গোটা দেশ। মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ ও রাজ্যের মুখ্য়সচিবকে তড়িঘড়ি ফোন করে অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতারির নির্দেশ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুকল্যাণমন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। কিন্তু প্রশ্ন একটাই। গত কয়েক মাস ধরে উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যের পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হওয়া সত্ত্বেও কড়া পদক্ষেপ কেন করা হয়নি?


কী বলছে পুলিশ?
ভিডিওটির সত্যতা এবিপি আনন্দ আলাদা করে যাচাই করেনি। তবে তা ভাইরাল হতেই এসপি, কে মেঘাচন্দ্র সিংহ একটি প্রেস নোট জারি করেন। তাতে লেখা, '২০২৩-র ৪ মে, ২ মহিলাকে অজ্ঞাতপরিচয় সশস্ত্র দুষ্কৃতীদের সম্পূর্ণ নগ্ন করে ঘোরানোর ঘটনায় অপহরণ, গণধর্ষণ এবং খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলাটি অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে থৌবাল জেলার নোঙ্গপোক সেঙ্গমাই পুলিশ স্টেশনে রুজু করা হয়েছে। এর মধ্য়ে তদন্তও শুরু করেছে রাজ্য পুলিশ। দুষ্কৃতীদের যত দ্রুত সম্ভব, গ্রেফতার করার চেষ্টা চলছে।' প্রেস নোটটি পরে বিজেপির আইটি-সেলের ইন চার্জ অমিত মালব্য ট্যুইটও করেন। ঠিক কী ভাবে অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে, তার পুঙ্খনাপুঙ্খ বিবরণ দেওয়া রয়েছে নোটে। শুধু রাজ্য পুলিশ নয়, কেন্দ্রীয় বাহিনীও এই কাজে সামিল। মণিপুরের উপত্যকা ও পাহাড়ি জেলা, সব দিকেই চিরুনি তল্লাশি চালাচ্ছে তারা। এই অভিযানে, ২টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ২টি ম্যাগাজিনও উদ্ধার হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ট্যুইট করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানিও। কিন্তু সংসদের বাদল অধিবেশন এই ঘটনা নিয়ে তপ্ত হতে পারে বলে এর মধ্যেই জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী ইতিমধ্যে এই নিয়ে ট্যুইট করেছেন। তাঁর মতে, 'প্রধানমন্ত্রীর নীরবতা ও নিষ্ক্রিয়তা রাজ্যে নৈরাজ্যের পরিস্থিতি তৈরি করেছে। মণিপুরে যে ভাবে ভারত-ভাবনা আক্রান্ত হচ্ছে, তা নিয়ে মোটেও নীরব থাকবে না INDIA। আমরা মণিপুরের মানুষের পাশে রয়েছি। শান্তিই একমাত্র এগিয়ে যাওয়ার রাস্তা।'


বিতর্ক...
এমন পৈশাচিক ঘটনা ঠিক কোথায় ঘটেছিল, তা নিয়ে এখনও পর্যন্ত ধোঁয়াশা রয়েছে। Indigenous Tribal Leaders' Forum-র দাবি, এটি ইম্ফল থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে কাঙ্গপোকপি জেলায় ঘটে। পুলিশ সে কথা মানতে চায়নি। তাদের বক্তব্য, ঘটনাটি অন্য এক জেলায় ঘটেছিল। কাঙ্গপোকপি-তে এফআইআর করা হয়। এই ধোঁয়াশার মধ্যে যেটি উঠে এসেছে, তা হল ঘটনার ঠিক এক দিন আগে মেইতেই এবং কুকি জনজাতির মধ্য়ে সংঘর্ষে জ্বলে উঠেছিল মণিপুর। বস্তুত, মেইতেই-দের তফশিলি উপজাতিভুক্ত হওয়ার দাবি ঘিরে গত কয়েক মাস ধরেই হিংসা-জর্জরিত হয়ে রয়েছে উত্তরপূর্বের এই রাজ্য। কিন্তু তার পরও কেন হুঁশ নেই প্রশাসনের? আগে থেকে সতর্ক হলে কি এই পৈশাচিক ঘটনা এড়ানো যেত না? উত্তর নেই। এখনও অভিযুক্তদের খুঁজছে পুলিশ।


আরও পড়ুন:'বন্দে মাতরম উচ্চারণ করতে পারব না', সপা বিধায়কের মন্তব্যে উত্তাল মহারাষ্ট্র বিধানসভা; শুরু বিতর্ক