রাজা চট্টোপাধ্যায়, জলপাইগুড়ি: উত্তরবঙ্গের জন্য বিশেষভাবে নির্বাচনী ইস্তেহার প্রকাশ করতে চলেছে বিজেপি। ইস্তেহারে থাকছে ফোর লেন রাস্তা তৈরি, শিল্প স্থাপন, কর্মসংস্থান, বাংলাদেশের সঙ্গে রেলপথ তৈরির মতো একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতি। বিজেপির ইস্তেহার প্রকাশ আসলে নির্বাচনী চমক, কটাক্ষ তৃণমূলের।


২০১৯-এর লোকসভা ভোটে উত্তরবঙ্গে হোয়াইট ওয়াশ হয়ে গিয়েছে তৃণমূল! ২১-এর বিধানসভায় ভোটে সেই ধারা অব্যাহত রাখতে এবার শুধু উত্তরবঙ্গের জন্যই আলাদা ইস্তেহার প্রকাশ করতে চলেছে গেরুয়া শিবির। আর ভোটের মুখে এ নিয়েই এখন তৃণমূল-বিজেপির জোর তরজা! জলপাইগুড়ির বিজেপি সভাপতি বাপি গোস্বামী বলেন, ‘‘ইস্তেহার নিয়েই এবার মানুষের কাছে আমরা যাব, মানুষ সব দেখছে তো, একবার সুযোগ দিক মানুষ, আমরা কি করতে পারি দেখিয়ে দেব ৷’’


জলপাইগুড়ির তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণী বলেন, ‘‘বিজেপির নির্বাচনী ইস্তেহার প্রকাশ আসলে নির্বাচনী চমক। সব ভাঁওতাবাজি চলছে বিজেপির, ভোটবাক্সে প্রভাব পড়বে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের ৷ ’’


বিজেপি সূত্রে খবর, উত্তরবঙ্গের জন্য বিজেপির ইস্তেহারে থাকছে ফোর লেন রাস্তা তৈরি, শিল্পায়ন, কর্মসংস্থান এবং বাংলাদেশের সঙ্গে রেল যোগাযোগের জন্য নতুন লাইন পাতা-সহ একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতি। জলপাইগুড়ির বিজেপি সভাপতি বাপি গোস্বামী বলেন, ‘‘দ্বিতীয় তিস্তা সেতুর ওপারে কয়েকশো বিঘা জমি পড়ে রয়েছে সেখানে প্রচুর মানুষের কর্মসংস্থান হবে, হলদিবাড়ি-চিলাহাটি দিয়ে বাংলাদেশের ট্রেন কেউ কোনওদিন ভেবেছিলেন?  জলপাইগুড়িতে কলকাতা হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ হবে এটা মানুষ ভেবেছিল? সব নরেন্দ্র মোদির জন্যই হয়েছে, মেডিকেল কলেজ ভেবেছিলেন? আগামী দু’মাস পর দেখতে পারবেন উত্তরবঙ্গের সার্বিক উন্নয়ন।’’


পাল্টা তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি, সার্কিট বেঞ্চ থেকে রাস্তা সম্প্রসারণ, রাজ্য সরকারের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা না থাকলে কিছুই হত না। জলপাইগুড়ির তৃণমূলের সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণীর মতে, ‘‘ফোর লেনের জমি যদি রাজ্য সরকার না দিত তাহলে ফোর লেন হত? এখনও বহু প্রজেক্টের টাকা সেন্ট্রাল দেয়নি। সব কিছুতেই রাজ্য সরকারের অবদান রয়েছে, মেডিক্যাল কলেজের ডিক্লিয়ারেশন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের, সার্কিট বেঞ্চও মমতার উদ্যোগে হয়েছে, অস্থায়ী পরিকাঠামো উনি দিয়েছেন, স্থায়ী পরিকাঠামোর জন্য জমি দিয়েছেন। জলপাইগুড়িতে পরিকাঠামো থাকা সত্ত্বেও টি অকশন সেন্টার গড়ে তুলতে পারেননি বিজেপি সাংসদ।’’


উত্তরবঙ্গে মোট বিধানসভা আসন ৫৪টি। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের বিধানসভা ভিত্তিক ফলের নিরিখে ৩৭টি আসনেই বিজেপি এগিয়ে। তৃণমূল এগিয়ে ১৩টি আসনে। আর চারটি আসনে এগিয়ে রয়েছে কংগ্রেস। এই অবস্থায় আসন্ন বিধানসভা ভোটে উত্তরবঙ্গের আসনগুলিতে জিততে মরিয়া সব পক্ষই।