কলকাতা : বজ্রাঘাতের জেরে রাজ্যে মৃত্যুমিছিল। তিন জেলায় মৃত্যু হয়েছে ছাব্বিশজনের। যার মধ্যে শুধুমাত্র হুগলিতেই বাজ পড়ে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে, মুর্শিদাবাদে মৃতের সংখ্যা ৯। এর পাশাপাশি পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর ও বাঁকুড়ায় দু'জন করে বজ্রাঘাতে মারা গিয়েছেন। এই ভয়াবহ ঘটনাক্রমের পর শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর। ২ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা করেছে পিএমও-র। মৃতদের পরিবারের সঙ্গে বুধ ও বৃহস্পতিবার দেখা করবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।


হুগলি জেলায় মৃতদের মধ্যে অধিকাংশই মাঠে চাষের কাজ করছিলেন। সেই সময় বজ্রপাতে তাঁদের মৃত্যু হয়। এদিকে পূর্বাভাসমতোই আজ কলকাতায় নামল বৃষ্টি। ফিরল স্বস্তি। গত কয়েকদিনের তীব্র গরমের পর আজ প্রাক-বর্ষার বৃষ্টি নামল শহরে।


এর আগে আবহাওয়া অফিসের তরফে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল, আগামী কিছুক্ষণের মধ্যেই কলকাতায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হবে। কলকাতার একাংশে ঘণ্টায় ৩০-৪০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া হবে। এছাড়া কলকাতা ছাড়াও উত্তর ২৪ পরগনার একাংশে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়। 


গতকালই বৃষ্টিতে ভিজেছে দক্ষিণবঙ্গ। তবে আগামী ১১ জুনের আগে দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা আসার সম্ভাবনা নেই। এমনই জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। দক্ষিণবঙ্গে এখনই তীব্র গরমের হাত থেকে রেহাইয়ের সম্ভাবনা নেই।


আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, রবিবার হিমালয় সংলগ্ন পাঁচ জেলায় ঢুকে পড়েছে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু। সেই মৌসুমী বায়ুর হাত ধরেই রবিবার উত্তরবঙ্গে শুরু হয়েছে বৃষ্টি। প্রবল বৃষ্টির জেরে সিকিমের বিভিন্ন জায়গায় নেমেছে ধস। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাড়ি, রাস্তা। তবে হতাহতের কোনও খবর নেই।


আলিপুর আবহাওয়া দফতরের গতকালের পূর্বাভাসে বলা হয়, আগামী ১১ জুন উত্তর বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের হাত ধরে ঢুকবে বর্ষা। ততদিন পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গে গরম এবং অস্বস্তি বজায় থাকবে। তবে মাঝেমধ্যেই প্রাক-বর্ষার বৃষ্টি কিছুটা স্বস্তি এনে দিতে পারে। কলকাতার পাশাপাশি, রবিবার বৃষ্টি হয়েছিল বিভিন্ন জেলাতেও। বীরভূমে আচমকাই বজ্রবিদ্যুত্‍সহ বৃষ্টি হয়। বীরভূমের সিউড়িতেও বজ্রবিদ্যুত্‍ সহ বৃষ্টি হয়।  অন্যদিকে, পূর্ব মেদিনীপুরে মহিষাদলে অমৃতবেড়িয়ায় ঝড়-বৃষ্টিতে ভেঙে পড়ে গাছ। ছিঁড়ে যায় বিদ্যুতের তার। বৃষ্টি হয় হুগলি ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার কিছু জায়গায়।


উল্লেখ্য, সারা দেশে এবার মোটের উপর বৃষ্টিপাত হবে স্বাভাবিক। কিন্তু উত্তর-পূর্ব ভারতে বৃষ্টি হবে স্বাভাবিকের থেকে কিছুটা কম। কিছুটা কম বৃষ্টি হবে অসম, বিহার, ঝাড়খণ্ড ও বাংলার কিছু জেলায়। এমনই পূর্বাভাস মৌসম ভবনের।