কলকাতা  : সারা দেশের মতোই রাজ্যে অব্যাহত করোনাভাইরাসের দাপট।   রাজ্যে করোনা সংক্রমণে আরও ২ চিকিত্সকের মৃত্যু।  করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন খড়গপুরের চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী। সল্টলেকের বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। কোভিড সংক্রমণে মৃত্যু বহরমপুরের চিকিত্সক ইন্দ্রনীল সাহার।


রাজ্যে চলছে করোনার লাগামছাড়া সংক্রমণ। সেইসঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যু। গত শুক্রবার একদিনে রাজ্যে চার জন চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে।তাঁদের মধ্যে ছিলেন   প্যাথোলজির অধ্যাপক-চিকিৎসক সুবীরকুমার দত্ত।এছাড়াও মৃত্যু হয়েছে,এনআরএসের প্রাক্তন চিকিৎসক সতীশ ঘটক।মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালের চিকিৎসক বছর সাইত্রিশের সন্দীপন মণ্ডল ও বারাসাতের চিকিৎসক উৎপল সেনগুপ্তর।


সংক্রমণ শৃঙ্খল ভাঙতে রবিবার থেকেই রাজ্যজুড়ে কার্যত লকডাউন শুরু হয়েছে। আর এদিনই করোনায় দৈনিক মৃত্যুতে ফের রেকর্ড হল রাজ্যে।  রবিবার স্বাস্থ্য দফতরের রবিবারের বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১৪৭ জনের। শনিবার ও শুক্রবার যা ছিল ১৩৬ ও ১৪৪।


তবে সাময়িক স্বস্তি দিয়ে কমেছে দৈনিক সংক্রমণ। স্বাস্থ্য দফতরের রবিবারের পরিসংখ্যান বলছে, করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৯ হাজারের কিছু বেশি।আগের দু’দিনের তুলনায় যা কিছুটা কম।


সারা দেশের সঙ্গে এ রাজ্যেও করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের দাপট চলছে। সংক্রমণের চেন ভেঙে ভয়ঙ্কর এই পরিস্থিতিতে লাগাম টানতে ১৫ দিনের জন্য কড়া পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার।গত শনিবার জানানো হয়, রবিবার সকাল ৬টা থেকে ৩০ মে, সন্ধে ৬টা পর্যন্ত কার্যত লকডাউন জারি থাকবে রাজ্যে।৩০ মে পর্যন্ত স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়-সহ সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। জরুরি পরিষেবার দফতর ছাড়া বন্ধ থাকবে সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি অফিস। জরুরি সামগ্রীর উৎপাদন ছাড়া বন্ধ থাকবে কল কারখানা।আগের মতোই বন্ধ থাকবে সিনেমা হল, রেস্তোরাঁ, শপিং মল, জিম, স্পোর্টস কমপ্লেক্স, স্পা। করা যাবে না কোনওরকম জমায়েত। বিয়ে বাড়িতে ৫০ জনের বেশি আমন্ত্রণ করা যাবে না।সৎকারে থাকতে পারবেন না ২০ জনের বেশি ।জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রাত ৯টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত বাড়ির বাইরে বেরনো যাবে না।দু-বেলা নয়, ৩০ মে পর্যন্ত এক বেলা খোলা থাকবে বাজার হাট। 
বাজার-হাট, মুদি দোকান, দুধ, রুটি, মাংস, ডিমের দোকান খোলা থাকবে সকাল ৭টা থেকে ১০টা পর্যন্ত।
মিষ্টির দোকান খোলা থাকবে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।গয়না এবং শাড়ির দোকান খোলা থাকবে বেলা ১২টা থেকে দুপুর ৩টে পর্যন্ত।তবে সাধারণ দিনের মতোই ওষুধ ও চশমার দোকান খোলা থাকবে। ই-কমার্স এবং হোম-ডেলিভারি পরিষেবা চালু থাকবে।


 


তবে দৈনিক মৃত্যু ও আক্রান্তের নিরিখে ফের কলকাতাকে ছাপিয়ে গেছে উত্তর চব্বিশ পরগনা। গত ২৪ ঘণ্টায় ওই জেলায় করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৪ হাজার ১১৬ জন। যেখানে কলকাতায় আক্রান্ত হয়েছেন সাড়ে ৩ হাজারের কম।উত্তর চব্বিশ পরগনায় একদিনে মৃত্যু হয়েছে ৩৯ জনের।কলকাতায় সেই সংখ্যাটা ৩৩।