কলকাতা: করোনার সঙ্গে লড়াইয়ে রাজ্য সরকারের তৈরি গ্লোবাল অ্যাডভাইসরি বোর্ড রাজ্য সরকারকে হাসপাতালের আরও বেড ফাঁকা রাখার পরামর্শ দিল। এ জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ করার কথা বলেছে তারা।


বুধবার এ রাজ্যে করোনা মৃতের সংখ্যা ১,০০০ পেরিয়েছে। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে আনতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে গঠিত ৮ সদস্যের বোর্ড বলেছে, রাজ্য সরকার অতি সংক্রমিত এলাকাগুলি আগে চিহ্নিত করুক, সেগুলিকে লোকাল কনটেনমেন্ট জোনে পরিণত করুক। এ জন্য পরীক্ষার সংখ্যা অনেক বাড়াতে হবে। তারা বলেছে, শুধু লকডাউনে ভরসা করলে চলবে না, কারণ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে লকডাউনের মত অস্ত্র ভোঁতা হয়ে যেতে বাধ্য।

বোর্ড আরও বলেছে, করোনা পজিটিভ হলেও যাঁদের অবস্থা ততটা গুরুতর নয়, শরীরে কোনও লক্ষণ নেই বা থাকলেও অল্প আছে, তাঁদের হাসপাতালের বেড দখল করে রাখার দরকার নেই। বাড়িতে জায়গা থাকলে সেখানেই আইসোলেশনে থাকুন। জায়গা না থাকলে যান কমিউনিটি সেন্টারে, করোনা চিকিৎসায় সরকার এমন বেশ কিছু হোম খুলেছে বলে জানা গিয়েছে। এই সব সেন্টারে যাতে যথেষ্ট বেড থাকে তা সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে।

যেভাবে বাড়ির কেউ করোনা আক্রান্ত হলে গোটা পরিবারকে এক ঘরে করে দেওয়া হচ্ছে তা ট্রাজিক বলে ব্যাখ্যা করেছে বোর্ড। এর ফলে মানুষ সংক্রমিত হলেও গোপন করছেন, ফলে চিকিৎসা শুরু হতে দেরি হয়ে যাচ্ছে। আবার প্রতিবেশীদের হাতে নিগৃহীত না হতে, নিজেদের বাঁচাতেই অনেকে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে যাচ্ছেন, যখন চিকিৎসাগতভাবে তাঁদের হাসপাতালে যাওয়ার দরকার তখনই নেই।

বোর্ড আরও বলেছে, করোনার চিকিৎসায় নিয়মিত উন্নতি হচ্ছে। তারপরেও এই রোগ নিয়ে এ ধরনের ভয় ও আশঙ্কা কাম্য নয়। করোনার বিরুদ্ধে আমাদের জয় হবেই কিন্তু আমাদের সামাজিক বিন্যাস যাতে অক্ষুণ্ণ থাকে সেটাও দেখতে হবে। যারা সংক্রমিতের পরিবারকে নিগ্রহ করছে সরকারের উচিত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।

এ ধরনের পরিস্থিতিতে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলি দরকারে কাজে লাগতে পারে, বলেছে বোর্ড। কিন্তু এ জন্য রাজ্যের মানুষের সাহায্য দরকার। পশ্চিমবঙ্গের তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে, কারণ তরুণদের এই রোগে খুব বেশি আক্রান্ত হওয়ার ভয় নেই। তাঁরাই নেতৃত্ব দিন এ কাজে।