শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কোচবিহার: নজরে হিন্দিভাষীদের ভোট। এবার কোচবিহারে হিন্দিভাষীদের জন্য আলাদা সেল তৈরি করল তৃণমূল। যা নিয়ে তৃণমূলকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। বিধানসভা ভোটের আগে তুঙ্গে উঠেছে দু’দলের তরজা। ভোটযুদ্ধে তৃণমূলকে হারাতে লাগাতার বাংলায় আসছেন নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহ জেপি নাড্ডারা। পাল্টা, ভোটের আগে বাঙালি আবেগকে হাতিয়ার করছে তৃণমূল। বিজেপির গায়ে ‘বহিরাগত তকমা’ সেঁটে দেওয়ার কৌশল নিয়েছে রাজ্যের শাসকদল! তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই বলেছিলেন, বহিরাগত গুণ্ডাদের দিয়ে নাকি বাংলা দখল করবে!
বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা জানান, ‘‘যেভাবে বিজেপি নেতাদের বহিরাগত বলা হচ্ছে তা বাংলার সংস্কৃতি নয়।’’এই প্রেক্ষাপটেই, এবার কোচবিহারে হিন্দিভাষীদের জন্য আলাদা সেল তৈরি করল তৃণমূল। জেলা সভাপতি করা হয়েছে, সদ্য বিজেপি থেকে তৃণমূলে আসা মণীশ বানিয়াকে। যা নিয়ে কটাক্ষের সুর বিজেপির গলায়। বিজেপির যুব মোর্চার রাজ্য কমিটির সদস্য পঙ্কজ গুচ্চা জানান, বহিরাগত বলায়, হিন্দীভাষীদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চর হয়েছে, সেটাকে ধাপাচাপা দেওয়ার জন্য হিন্দি সেল তৈরি করেছে।
রাজ্যের ২৯৪টি বিধানসভা আসনের অন্তত ৭০টি আসনে হিন্দিভাষী ভোটারদের প্রভাব রয়েছে। কোচবিহার, দিনহাটা, মেখলিগঞ্জে হিন্দিভাষী ভোটারদের সংখ্যা বেশ ভাল। এই অবস্থায় হিন্দিভাষীদের ভোটকে টার্গেট করছে তৃণমূল। কোচবিহারের তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় জানান, ‘‘সমস্ত বাচিক গোষ্ঠীর মানুষ, বাংলার অধিবাসী, তাদের একটা বড় অংশ হিন্দিভাষী, বিশেষ করে শহরাঞ্চলগুলিতে, তৃণমূলের হিন্দি সেল আজ থেকে পথচলা শুরু করল। রাজ্যের যারা ভোটার তাঁরা বহিরাগত নয়, বাইরে থেকে এসে যারা বিজেপিকে জেতানোর জন্য উল্টোপাল্টা প্রচার করছে, তারাই বহিরাগত।’’
লোকসভা ভোটের সময় থেকেই অবাঙালি ভোটব্যাঙ্কের বড় অংশ বিজেপির দিকে ঝুঁকেছে। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে ২৫ শতাংশের বেশি অবাঙালি ভোটার রয়েছেন, এমন ১০টি কেন্দ্রের মধ্যে ছ’টিতেই জিতেছে বিজেপি। এই প্রেক্ষাপটে বিধানসভা ভোটে ‘বহিরাগত বনাম বাঙালি’ রাজনৈতিক তত্ত্ব কোনও প্রভাব ফেলে কি না, তার উত্তর ভোটের ফলেই মিলবে।