রানা দাস, পূর্ব বর্ধমান: রাতের অন্ধকার তখনও পুরোপুরি কাটেনি। ভোর হয় হয় ৷ সেই সময় অজয় নদের বুকে ভেসে বেড়াচ্ছে বেশ কিছু নৌকা। একটু লক্ষ্য করলেই দেখা যাচ্ছে, একটাও মাছ ধরার নৌকো নয়। নদের মাঝে গিয়ে, জলের মধ্যে বালতি চুবিয়ে তোলা হচ্ছে বালি।
পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া, মঙ্গলকোট, কেতুগ্রাম সহ বেশকিছু জায়গায় রাতের অন্ধকারে এভাবেই চলছে বালি পাচার। দিনের বেলা এই বালি রাখা হচ্ছে রাস্তার ধারে। তারপর, লরি অথবা ট্রাকে তা বোঝাই হয়ে পাচার হয়ে যাচ্ছে অন্যত্র।
বাসিন্দাদের দাবি, প্রশাসনের চোখ এড়িয়ে দীর্ঘদিন ধরে এভাবেই অজয়ের বুক থেকে পাচার হয়ে যাচ্ছে বালি। অবৈধভাবে বালি তোলায় বিপজ্জনক হয়ে যাচ্ছে অজয়। ভাঙছে নদীর পার। শুধু তাই নয়, ওভারলোডেড ট্রাক কিম্বা লরিতে নষ্ট হচ্ছে রাস্তা। বাড়ছে পথ দুর্ঘটনার আশঙ্কা। কাটোয়ার বাসিন্দা কিরণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ‘‘অবৈধভাবে বালি পাচার। শাসকদলের মদতে। পুলিশের সহযোগিতায়। ওভারলোড গাড়ি। চোখে বালি ঢুকছে।’’
অবৈধ বালি পাচার নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। পূর্ব বর্ধমানের বিজেপি সহ সভাপতি অনীল দত্ত জানান, ‘‘বালি তোলা হচ্ছে। প্রশাসনকে আগেও জানিয়েছি। বিজেপির অভিযোগ এই অবৈধ বালি প্রশাসনের মদতে হচ্ছে এবং তার একটা টাকা তৃণমূলের নেতাদের পকেটে যাচ্ছে। ’’কাটোয়ার তৃণমূল বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় জানান, ‘‘তৃণমূল কোনওদিন বালির টাকা নেয়না। যাঁরা তুলছে, তাঁদের মদত দিচ্ছে বিজেপি। এই বালি তোলার পেছনে রয়েছে বিজেপির হাত।’’
প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, বালি পাচার রুখতে ফের অভিযান চালানো হবে। ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরের আধিকারিক বীরেন্দ্রনাথ দাস জানান, ‘‘এইভাবে বালি তোলা যায় না। আমাদের কাছে খবর আছে। আগেও অভিযান হয়েছে। আবার পুলিশকে নিয়ে অভিযান করব ৷’’কাটোয়া থানার তরফে জানানো হয়েছে, বালি পাচার রুখতে নিয়মিত অভিযান চালানো হয়। আগামীদিনেও চালানো হবে।