কলকাতা: করোনা মোকাবিলায় আরও কড়া অবস্থান নিল রাজ্য সরকার। ৩০ মে পর্যন্ত এই নিয়ম জারি থাকবে বলে আজ নবান্নে এই ঘোষণা করেছেন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করলেন একাংশের চিকিৎসকরা।


রাজ্যের এই সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে চিকিৎসক দীপ্তেন্দ্র সরকার বলেন, যে জায়াগায় এখন পরিসংখ্যান যাচ্ছে ২০ হাজার সংক্রমণ, অ্যাক্টিভ কেসের সংখ্যা ১ লক্ষ ৩০ হাজার তাতে বেসিক পরিষেবা চালু রেখে লকডাউন বা লকডাউনের মতো বিধি পালন করলে আশা করব এই পরিসংখ্যানটা নেমে আসবে। ১৮ থেকে ৪৪ বছরের মধ্যে টিকাকরণ শুরু করার চেষ্টা করছি। কিন্তু সেটা অপ্রতুল। তাই কড়াকড়ি পালনই এই মুহূর্তে বুদ্ধিমত্তার কাজ। একটা মাঝামাঝি অবস্থানে লকডাউনের মধ্যেই ছিলাম প্রায়। এটা আরেকটু কড়া হল। আশা রাখব পরিসংখ্যানটা কমবে। মৃত্যুহারটাও কমবে। আগামী দুসপ্তাহ রাজ্য সহ সারা ভারতের ক্ষেত্রেই খুব গুরুত্বপূর্ণ।


এই সিদ্ধান্ত প্রয়োজন ছিল বলে মনে করছেন চিকিৎসক শিবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন,যে কোনও একটা প্রশাসনিক মোড়কে বিধি নিষেধ লাগু করা দরকার ছিল। কারণ করোনা সংক্রমণে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো সমস্যায় ছিল। স্বাস্থ্যকর্মীরা ক্লান্ত, অক্সিজেনের চাহিদা, ওষুধের চাহিদার জোগানে সমস্যায় হচ্ছিল। সবথেকে বেশি প্রয়োজন সংক্রমণটা রোধ করা। এই লকডাউনটা যখন হবে ১৪ দিনের মাথায় ভাইরাসের গতি শ্লথ হবে। সংক্রমণ, মৃত্যু হার কমবে।


এ বিষয়ে চিকিৎসক কুণাল সরকার বলেন, সমস্যা যে হারে বাড়ছে তাতে সাময়িকভাবে কন্ট্রোল করা যাবে। সেই কন্ট্রোল, করাটাই এখন বেশি দরকার। এখন যা অবস্থা তাতে সবটা চিকিৎসা ব্যবস্থার মাথার উপর দিয়ে চলে যাচ্ছে। অনেকেই চিকিৎসা পরিষেবা পাচ্ছেন। তার থেকেও বেশি মানুষ চিকিৎসা ব্যবস্থার কাছাকাছি এসে পৌঁছতে পারছেন না। তবে একইসঙ্গে টিকাকরণ ব্যাহত হবে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। তিনি বলেন, ভ্যাকসিনেশনের সংখ্যাটা দুর্বল হয়ে পড়বে। আমাদের দুদিকেই বিপদ। সংক্রমণ কমবে। তবে ভ্যাকসিনেশনও কমবে।


কঠিন সিদ্ধান্ত, সাহসী সিদ্ধান্ত বলে ব্যাখ্যা করেছেন চিকিৎসক কাজল কৃষ্ণ বণিক। তিনি বলেন, এখন দেখার কতটা কার্যকরী হয়। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ হিসেবে আমরা বলেছিলাম মানুষের থেকে মানুষের সংক্রমণ ছড়ায়। প্রতিদিন ২০ হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। দেশব্যাপী ৪ হাজারের কাছাকাছি মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, রাজ্যে ১০০-র বেশি। হাসপাতালে বেড খালি নেই, অক্সিজেন কমছে। অনেকের অসুবিধা হবে। কিন্তু অন্য কোনও উপায়ও ছিল না। অনেক আবেদন করেও কাজ হয়নি।